প্রধান উপদেষ্টা সমীপেষু
ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গুজব ও হত্যা মামলায় চলছে শিল্প ধ্বংসের ষড়যন্ত্র
নাজমুল হক শ্যামল
|
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যবসায়ীদের নামে সুপরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অপ্রপচার ও গুজব ছড়িয়ে শিল্প খাত ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র মেতে উঠেছেন একটি অসাধু চক্র। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে দেশ ও দেশের বাইরে থাকা এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী গোষ্ঠীকে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে দেশের প্রধান রপ্তানিখাত তৈরি পোশাকশিল্প কারখানাগুলোয় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চক্রান্ত চালাচ্ছে অপর একটি মহল। এক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের সুনাম রয়েছে এমন বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলোকে বেশি টার্গেট করে এসব গুজব চালাতে দেখা যাচ্ছে। মিথ্যা অপ্রপচারের পাশাপাশি কাউকে কাউকে হত্যা মামলায়ও জাড়ানো হচ্ছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষও হতবিহ্বল। একই সাথে অন্তবর্তীকালীন সরকারকেও বিতর্কিত করা হচ্ছে। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং অর্থনৈতিক ক্রান্তিকালে ব্যবসা বাণিজ্য খাতের সুরক্ষায় মাননীয় প্রধান উদেষ্টার আশু হস্থক্ষেপ ও সরকার সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও নজরদারি অতীব জরুরি বলে মনে করছি। বড় বড় ব্যবসায়ীদের নামে গুজব ছড়ানো ও মিথ্যা হত্যা মামলা কেবল আইনের ব্যত্যয়ই নয়, দেশের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশেরও পরিপন্থি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর থেকে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শাসনকালে ক্ষমতাধরদের নামে সারা দেশে মামলা হয়। এতে এমন ব্যবসায়ীদেরও আসামি করা হচ্ছে, যাঁদের কোন রাজনৈতিক-সংশ্লিষ্টতা নেই। আর মিথ্যা গুজব ও অপপ্রচার থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না হাসিনার দুঃশাসনের সঙ্গে আপোষ না করা সর্বমহলে প্রশংসিত সৎ ব্যবসায়ীরাও। সংবাদ মাধ্যমের খবর মতে, চাঁদা ও তৈরি পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ না পেয়ে এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধার জন্য অনেককে আসামি করা হয়। এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছিলেন, দেশে এখন হত্যা মামলার নামে অরাজকতা চলছে। এ ব্যর্থতার দায় সরকারের। যারা এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি দিতে হবে। এসব মামলার বাদীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপকি ড. সবুর খান বলেন, কোন অনিয়ম প্রমাণিত হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো হীন মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে একটি মহল। যা পরিত্যাগ করা উচিত। দেশে বিদেশে বসে আরেকটি সুকৌশলী কুচক্রী মহল সমাজ ও অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্র্বতী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়ানো এ অশুভ গোষ্ঠীকে প্রতিহত ও পূর্ণশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। নয়তো ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন গণ আন্দোলনের ফলস্বরূপ উদ্ভূত নতুন বাংলাদেশ এবং প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের ওপর ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর আস্থা নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট ব্যবসায় সংস্কৃতির সামগ্রিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে দেশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী ব্যবসায়ীসমাজের মধ্যে দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনার নতুন অধ্যায় সূচনায় ড. ইউনূস সরকারও বদ্ধ পরিকর। আর সামগ্রিকভাবে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীও শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |