ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ ২৫ আশ্বিন ১৪৩১
কুড়িগ্রামে বিনা খরচে আইনীসেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন আইনীসেবা কেন্দ্রে
আহম্মেদুল কবির, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: Sunday, 29 September, 2024, 7:47 PM

কুড়িগ্রামে বিনা খরচে আইনীসেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন আইনীসেবা কেন্দ্রে

কুড়িগ্রামে বিনা খরচে আইনীসেবা দিয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন আইনীসেবা কেন্দ্রে

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের সুশাসন প্রকল্পের আওতায় আইনীসেবা কেন্দ্রে'র মাধ্যমে বিনা খরচে আইনী সেবা দেয়া হচ্ছে। সেবা পাওয়ায় দূর্গম চরাঞ্চলের মানুষজনের পারিবারিক ও সামাজিক কলহ কমেছে। প্রকল্পটির এই কার্যক্রম জেলার অন্যান্য চরাঞ্চলে বর্ধিত করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছে অন্যান্য চরাঞ্চলবাসী।

প্রকল্পটির কর্ম এলাকা কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত অষ্টমীরচর, নয়ারহাট ও চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কয়টি আইনী সেবাকেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এসমস্ত আইনী সেবাকেন্দ্রে স্থানীয় সাধারণ মানুষজন বিনা খরচে বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক কলহ সমাধানের জন্য আইনী সেবা নিতে প্রতিনিয়তই ছুটে আসেন কেন্দ্র গুলোতে। সেবাকেন্দ্রগুলো স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অন্যায়, বিভিন্ন অপরাধ, সামাজিক বিরোধ দক্ষতার সাথে সমাধান করে আসছে।

স্থানীয়রা জানায়, নদনদী পাড়ি দিয়ে সামান্য কিছু ঘটনায় কিংবা পারিবারিক কোন বিরোধ আইগত সেবা নেয়ার জন্য থানায় যেতে হতো। এতে অর্থের অপচয়, সময়ের অপচয় এবং একই সাথে সিমাহীন কষ্ট সহ্য করতে হতো। এখন বিনা খরচে দুর্গম চরাঞ্চল মানুষজনের দোর গোড়ায় আইনী সেবা পাওয়ায় অত্র চরাঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার মানুষজন খুব খুশি।

জানা যায়,, ২০১২ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের উদ্যোগে উপজেলার ০৩ টি ইউনিয়নে চালু করে 'আইনী সেবাকেন্দ্র'। বর্তমানে ১৭টি কেন্দ্র রয়েছে। এতে প্রতিটি কেন্দ্রে ০২ জন করে 

প্যারালিগ্যাল রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে আসছেন। সংস্থাটি গত একমাসে ০৩ ইউনিয়নে ২০০ জনকে আইনী সেবা দিয়েছে। নয়ারহাট ইউনিয়নের খেরুয়ার চর গ্রাম ঘুরে জানা যায়, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ কমিউনিটি প্যারালিগ্যাল রেহেনা আক্তার ও ইরিনা খাতুন চরের মানুষদের আইনী পরামর্শ ও সেবা দিয়ে আসচ্ছেন। তারা বলেন, ফ্রেন্ডশিপ কমিউনিটি গুড গভর্ননেন্স এইড গত আগষ্ট মাসে ১৭জনকে এবং চলতি মাসে প্রায় ১৫জনকে আইনী পরামর্শ ও সেবা প্রদান করেছে। সহায়তা নিতে আসা মেহেরা বেগম বলেন, আমার বয়স হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা ভরণপোষণ দিচ্ছে না। পরে আমি আইনী সেবাকেন্দ্রে এসে সহায়তা চাইলে তারা আমাকে সহযোগিতা করে। আমার সন্তানদের কাছে গিয়ে কথা বলে। এখন তারা আমার ভরণপোষণ দেয়। 

অপর এক নারী সুফিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী প্রায় আমাকে নির্যাতন করে। পরে কোনো উপায় না পেয়ে কেন্দ্রে এসে কথা বললে, এখানকার আপারা গিয়ে আমার স্বামীকে বুঝিয়েছে।আইনী প্রক্রিয়ায় কি কি হতে পারে। আমার স্বামী বিষয়টি বুঝতে পেরেছে।

এখন পারিবারিক এই সমস্যাটা আর নেই। আমি এখন ভালো আছি। ফ্রেন্ডশিপ কমিউনিটি প্যারালিগ্যাল (এফসিপি) রেহানা আক্তার জানান, সপ্তাহের তিন- চারদিন করে লোকজন আসেন। এর মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। তাদের সমস্যাগুলো শুনে এর আইনী কি কি পদক্ষেপ রয়েছে, সেগুলো তাদের জানিয়ে দেই। এছাড়াও আমরা অভিযোগগুলো নিয়ে বা সহায়তা দেয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে যে সমস্ত সমস্যা থাকে, সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করি। তিনি আরও বলেন, চলতি মাসে এখন

পর্যন্ত আইনী সেবাসহ সবধরণের সেবা পেয়েছেন ১৫ জন। ফ্রেন্ডশিপের সুশাসন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. আব্দুল মান্নান জানান, সংস্থার কমিউনিটি প্যারালিগ্যালের কর্মীগণ ইউনিয়নের পরিষদের বিভিন্ন সভায় যোগদান করে থাকেন। চরাঞ্চলের ১৭টি আইনী সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সামাজিক ও পারিবারিক বিরোধ নিস্পত্তি করা হয়ে থাকে। ফলে দিন দিন চরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় ওঠছে এই আইনী সেবাকেন্দ্রগুলো। যে সমস্যা গুলো সমাধান করা সম্ভব হয়না সেগুলো জেলা লিগ্যাল এইডে পাঠানো হয়।

আইনী সেবাকেন্দ্রের এধরণের কার্যক্রমে অনুপ্ররাণিত হয়ে চিলমারী উপজেলা ঘেষা উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের  বিভিন্ন চরাঞ্চলবাসী, বেগমগজ্ঞ ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চলবাসী যাত্রাপুর, নারায়নপুর,ঘোগাদহ, নুনখাওয়া, ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চলবাসী এবং একই সাথে রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলবাসী দাবী করে জানান, ফ্রেন্ডশিপের সুশাসন প্রকল্পের উল্লেখিত আইনী সেবাকেন্দ্রের কার্যক্রম আরো বর্ধিত করা হলে বিশেষ করে দূর্গম চরাঞ্চলের মানুষজনের অনেক উপকার হতো এবং একই সাথে আদলতে মামলার চাপ কমে যেত।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status