ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯ আশ্বিন ১৪৩১
ঘুরে আসতে পারেন দেশের পরিবেশবান্ধব তিন ভ্রমণ গন্তব্য থেকে
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Sunday, 29 September, 2024, 9:58 AM

ঘুরে আসতে পারেন দেশের পরিবেশবান্ধব তিন ভ্রমণ গন্তব্য থেকে

ঘুরে আসতে পারেন দেশের পরিবেশবান্ধব তিন ভ্রমণ গন্তব্য থেকে

সেন্ট অগাস্টিন বলেছেন, ‘পৃথিবী একটা বই, আর যারা ভ্রমণ করে না, তারা বইটি পড়তে পারে না’। মানুষের মন কখনোই ঘরে বদ্ধ হয়ে থাকতে না। মন যেন সারাক্ষণই বলে যায়, আহারে আহারে, কবে যাব পাহাড়ে? তাই ভ্রমণপিপাসু মানুষ ছুঁটে বেড়ায় এক স্থান থেকে অন্যত্র।

আজ (১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব) পর্যটন দিবস। পর্যটনের গুরুত্ব এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মান তুলে ধরার উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। এবছর বিশ্ব পর্যটন দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পর্যটন এবং শান্তি’। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড দিবসটি পালন করছে ‘পর্যটন শান্তির সোপান’ প্রতিপাদ্যে। টেকসই পর্যটন হলো পরিবেশবান্ধব পর্যটন এলাকায় প্রকৃতি ও পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে ভ্রমণ করা। 


পর্যটনের এই ধারণা এসেছে পরিবেশ ও প্রকৃতিকে রক্ষণাবেক্ষণ থেকে। ভ্রমণ করে আমরা জমে থাকা ক্লান্তি ভুলে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু ভ্রমণকারী বা পর্যটকরা কতটা সচেতন আর পরিবেশবান্ধব, সেই প্রশ্ন রয়েই যায়। পরিবেশবান্ধব ও সচেতন পর্যটক হিসেবে নিজেকে পরিবর্তনের দায়িত্ব নিতে হবে সবার। 

পোষা টিকটিকি থেকে লাক্সারি ঘড়ি, হোটেলে যা ফেলে যান অতিথিরাপোষা টিকটিকি থেকে লাক্সারি ঘড়ি, হোটেলে যা ফেলে যান অতিথিরা
আর তাই স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে পর্যটকদের এক মেলবন্ধন খুব জরুরি। তাঁদের সংস্কৃতি ও জীবনযাপনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরিবেশবান্ধব এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতার নামই ‘ইকো ট্যুরিজম’। তেমনই কিছু জায়গা নিয়ে জানাবো এবারের পর্বে। পরিবেশ সচেতন পর্যটকদের জন্য রইল তিনটি ‘পরিবেশবান্ধব’ ট্যুরিস্ট স্পটের খোঁজ।


সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন গ্রাম মুনলাই পাড়া

বান্দরবানের সদর উপজেলা রুমা থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে মুনলাই পাড়া। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার ছোট্ট পাড়াটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। ২০১৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা তিন পার্বত্য জেলার সবচেয়ে গোছানো, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন গ্রামের উপাধি দেন এই মুনলাই পাড়াকে। 

এখানে এসে খালে কায়াকিং করারও সুযোগ থাকছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৩২ বছর আগে মাত্র ছয় বম সম্প্রদায়ের পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠে পাড়াটি। নাম রাখা হয় মুনলাই। তবে এখানে কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজম শুরু হয়েছে আরও বছর পাঁচ আগে। এখানে বিভিন্ন বাড়িতে ২৫-৩০ জন পর্যটক থাকতে পারবেন। আবার তাঁবু টানিয়ে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটিও করার সুযোগ রয়েছে এখানে। যেমন, ট্রেকিং, ৫৫০ ফুট দীর্ঘ জিপলাইন, নদী ও খালে কায়াকিং, এ গাছ থেকে ও গাছে চড়ার খেলারও সুযোগ থাকছে।


কীভাবে যাবেন: বাসে করে  ঢাকা থেকে প্রথমে যেতে হবে বান্দরবান। সেখান থেকে রুমা বাজার। বান্দরবান থেকে চান্দের গাড়িতে করেও যেতে পারবেন। দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার, আর সময় লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। রুমা বাজারের সেনাবাহিনীর গ্যারিসনে প্রথম দফা নাম লিখিয়ে নিতে হবে। তারপর রুমা বাজারের আর্মি ক্যাম্পে আরেক দফা নাম লিখিয়ে অনুমতি নিতে হবে। তবে কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজমের মাধ্যমে গেলে, আগে থেকেই তারা অনুমতির প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়। এই কাজটির জন্য আপনার সঙ্গে রাখতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট বা জন্মনিবন্ধন সনদ। রুমা বাজার থেকে বগা লেক ও কেওক্রাডং সড়কে তিন কিলোমিটার পর মুনলাই পাড়া। এটুকু পথে পাহাড়ে বেশ চড়াই–উতরাই রয়েছে। তারপরই পৌঁছে যাবেন কাঙ্ক্ষিত জায়গায়।

বনবাস ইকো ভিলেজ, সুন্দরবন

ঘরে বসে সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন এখানে। এছাড়াও নিরাপত্তার সঙ্গে থাকছে নিশিযাপন। মানসম্মত খাবারের পাশাপাশি এই শরতে বৃষ্টি বিলাসের সুযোগ, সবই মিলবে এক সঙ্গে। স্বল্প খরচে লোকালয় থেকে খুব কাছে ভ্রমণ করেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন উপভোগের সুযোগ করে দিয়েছে বনবাস ইকো ভিলেজ। জঙ্গলের ভেতরে রাত্রিযাপন যার সিদ্ধহস্ত শব্দ ‘বনবাস’-এর সুপ্ত বাসনা মনের গহীনে নেই, এমন মানুষ পাওয়া ভার! এই চিন্তা থেকেই সুন্দরবন এর জঙ্গলে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য তাদের এই প্রয়াস!


মনোরম এক পরিবেশ পাবেন এখানে এলে। 
নিরাপদ খোলামেলা বারান্দায় বসে কিংবা হ্যামক বা দোলনায় দোল খেতে খেতে সুন্দরবনের অপার্থিব সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। বানর, হরিণ, মেছো বাঘ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, জলজ্যান্ত কুমির দেখবেন। কখনোবা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হুংকার শুনে ছমছমে অনুভূতিতে ভাসবেন। বনবাস প্রস্তুত আপনাদেরকে নতুন কিছু দেয়ার প্রত্যয়ে। বনবাসে রয়েছে ৫টি প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির ভিলা যার সবকয়টিতেই রয়েছে ইনফিনিটি ভিউ।

প্লেনে সবসময় বাম দিকের দরজা ব্যবহার করা হয় কেন? প্লেনে সবসময় বাম দিকের দরজা ব্যবহার করা হয় কেন? 
রুমে কিংবা বারান্দায় বসেই প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে যেতে পারেন বনবাসে। রয়েছে একটি খোলা রেস্তোরাঁ যেখানে বসে প্রকৃতির মাঝে মিলিয়ে যাবেন! যার নাম দেয়া হয়েছে- গোলপাতা সরাইখানা। দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে মংলা বাস স্ট্যান্ড এসে মংলা ঘাট থেকে সরাসরি ট্রলার (ছাদ ওয়ালা নৌকা) যোগে রিসোর্টের আঙ্গিনায় চলে আসতে পারবেন সুন্দরবন এর ক্যানেল ক্রুইজিং করতে করতে।


টিলাগাঁও ইকো ভিলেজ

চা-বাগান আর নির্জন সবুজের অরণ্যর মাঝে মাটি এবং কাঠের তৈরি রিসোর্ট হচ্ছে টিলাগাঁও ইকো ভিলেজ। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার টিলাগাঁও গ্রামে প্রকৃতি ও চা বাগানের মাঝে গড়ে তোলা হয়েছে রিসোর্টটি। শ্রীমঙ্গল থেকে সিএনজিতে (ভানুগাছ রোডে) ১২ কিলো দূরে বটেরতল। বটেরতল থেকে ৩ কিলো ভেতরে টিলাগাঁও ইকো ভিলেজ।

এখানে থাকার জন্য কটেজ এবং ভিলাগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে।
এখানে থাকার জন্য কটেজ এবং ভিলাগুলো আপনাকে মুগ্ধ করবে। ছবি: টিলাগাঁওয়ের ফেসবুক থেকে
শ্রীমঙ্গল থেকে বটেরতল যাবার রাস্তাটা অসাধারণ। গাড়ি ছাড়ার পরেই রাস্তার ২ ধারে চা বাগানের দেখা মিলবে। তার একটু পরেই লাউয়াছড়া বন। বনের মধ্যে দিয়ে রাস্তা হওয়ায় রাস্তার ২ পাশে ঘন জঙ্গল আর উঁচু-নিচু কঠিন কঠিন বাক ঘুরেফিরে গাড়ি এগিয়ে যাবে। হঠাৎ করেই শীতলতা অনুভব করতে থাকবেন। অনেকটা ডুয়ার্স এর জঙ্গলের মধ্য দিয়ে রাস্তা যেমন, তেমন অনুভূতি পাওয়া যাবে।

সাড়ে পাঁচ’শ বছর পুরনো দিনাজপুরের এই সুরা মসজিদসাড়ে পাঁচ’শ বছর পুরনো দিনাজপুরের এই সুরা মসজিদ
আঁকাবাঁকা রাস্তার দু পাশের সবুজের সমারোহের সম্মোহন কাটতে কাটতে পৌঁছে যাবেন টিলাগাঁও ইকো ভিলেজ রিসোর্ট। নির্জন সবুজের অরণ্যর মাঝে মাটি এবং কাঠের তৈরি প্রতিটি কটেজ। বানরের বাঁদরামি আর শেয়ালের ডাক এখানটায় খুব অতি সাধারণ ব্যাপার। ক্ষেতের টাটকা সবজি-ফল আর মাটির চুলায় রান্না করা দেশি মুরগি আলু ভর্তা ও ডাল দিয়ে ভাত। এখানে রাতের আবহ নিয়ে আসে ঝিঁঝিঁ পোকা আর শেয়ালের ডাক।


রিসোর্টে রয়েছে লাভ শেইপের একটি পুকুর। পূর্ণিমায় সেই পুকুরে চাঁদের ছায়া পরে। চাঁদের আলোতে আলোকিত হয় দুরের চা বাগান পর্যন্ত। সে চাঁদের আলোয় ভেসে যেতে বাধ্য যে কেউ।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status