সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথম পূজা, যা বললেন সায়ন্তিকা
নতুন সময় ডেস্ক
|
আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে শুরু হলো আনন্দবাজার অনলাইনের বিশেষ বিভাগ ‘তারকার পুজো’। উদ্যাপনের স্মৃতি ও পরিকল্পনা জানাচ্ছেন বিনোদন জগতের তারকারা। এবার পূজা নিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের শেয়ার করে জানালেন টালিউড অভিনেত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত চারপাশে সে রকম উন্মাদনা চোখে পড়েনি। কারণটা নতুন করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। তবে এ বছরের পূজা আমার কাছে একাধিক কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। সায়ন্তিকা বলেন, আমার মনে হচ্ছে—এবার আমার জীবনের পূজার তৃতীয় পর্যায়। ছাত্রজীবনে বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে রাত জেগে ঠাকুর দেখা, রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়া করা— এটি ছিল একটা জীবন। তার পর যখন শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পেলাম, তখন এভাবে ঘোরাঘুরি বন্ধ হয়ে গেল। এর পরিবর্তে বন্ধুদের বাড়িতে আড্ডা দেওয়া বেড়ে গেল। গভীর রাতে তখন সবাই মিলে ঠাকুর দেখতে যেতাম। তখন পূজার সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যস্ততাও বাড়ল। সেখানে পূজা উদ্বোধন থেকে শুরু করে মাচা— সবই রয়েছে। এমনিতে পূজার সময়ে কাজ করতে বরাবর ভালোই লাগে। জন্মদিনে কখনো আমি শুটিংয়ের জন্য কলকাতার বাইরে থেকেছি। কিন্তু পূজার সময়ে আমি সাধারণত কলকাতাতেই থাকি। পূজার শহরের প্রতি আমার একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। পূজার সময়ে ষষ্ঠী-সপ্তমী পর্যন্ত আমি কাজ করি। তারপরও যদি কাজ আসে, আমি না বলি না। এ সংসদ সদস্য বলেন, কিন্তু এবারের পূজায় আমি তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছি। তিনি বলেন, বিধায়ক হিসেবে এটি আমার প্রথম পূজা। ইতোমধ্যে বরাহনগরের একাধিক পূজার উদ্বোধনের অনুরোধ এসেছে। তাই ওই আবার প্রথম পর্যায়ে ফিরে যাব। একটা টিম নিয়ে একটা পূজা থেকে আরেকটা পূজায় যাব। সেখানে আমাদের কাউন্সিলররা থাকবেন। তাদের মধ্যে অনেকেই নারী। আমাদের চেয়ারম্যানও একজন নারী। জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটার পর একটা পূজায় যাব, সেটি নিয়ে আমি বেশ উত্তেজিত। সবার সঙ্গে একটু স্বাধীনভাবে ঘুরতেও পারব। আবার সুযোগ পেলে কোথাও দাঁড়িয়ে ফুচকাও খেয়ে নেব। এ অভিনেত্রী বলেন, আমি কোনো দিনই পূজার আলাদা কোনো পরিকল্পনা করি না। তবে বাড়ির বড়দের দেওয়ার জন্য পোশাক নিজের হাতেই কেনার চেষ্টা করি। কিন্তু নিজের জন্য আলাদা করে কোনো দিনই পূজার কেনাকাটা করি না। কারণ যে পেশায় রয়েছি, সারা বছরই কিছু না কিছু কেনা হয়। কেউ হয়তো পূজার আগে একটা শাড়ি উপহার দিলেন। রেখে দিলাম পূজায় পরব বলে। তার বেশি কিছু নয়। সায়ন্তিকা বলেন, এ বছর আমার শহরের মন খারাপ। কেউ পূজায় অংশ নেবেন, কেউ হয়তো নেবেন না। কিন্তু তাই বলে তো মায়ের আসা থেমে থাকবে না। তবে এটা ঠিক— গত এক-দুই মাসে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এই শহর গেছে, তা দেখে জানি মানুষের অনেক জমে থাকা কথা প্রকাশ্যে এসেছে। এটার প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, আরজি করকাণ্ডে দোষীদের শাস্তি আমিও চাই। পূজায় অংশগ্রহণ করার অর্থ এটি নয় যে, আমি ন্যায়বিচার চাই না। দুর্গাপূজার পর কালীপূজা বা তারও পরে বড়দিন— কিন্তু আমার নিজের অবস্থান বদলাবে না। এ অভিনেত্রী বলেন, পূজা নিয়ে নানা কথা চারদিকে শুনেছি। ইদানীং তারকাদেরও খুব খারাপভাবে কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু পূজা উদ্বোধন, বিজ্ঞাপন, শুটিং— এগুলো তো আমাদের কাজ। রিল বানিয়ে তো আমি একটা পারিশ্রমিক পাই। এগুলো তো আমাদের উপার্জনের মাধ্যম! এটা নিয়ে কারও কোনো সমস্যা হলে কিছু করার নেই। ন্যায়বিচার না পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই আমরা আবার পথে নামব। কিন্তু আমি আজকে কাজ না করে বাড়িতে বসে থাকলে কি সেই পদ্ধতি আরও দ্রুত হওয়া সম্ভব? পুরো বিষয়টিই তো এখন সিবিআই দেখছে। ফলে পূজার অংশ হিসেবেও দাবি একটাই— দোষীদের যেন ফাঁসি হয়। তিনি বলেন, আগেই লিখেছি— এই বছর পূজায় বরাহনগরেই বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করব। কিন্তু তার পাশাপাশি শিল্পী হিসেবে কোথাও যদি যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তা হলে দুদিক ব্যালান্স করে চলব। আগে তো বাঁকুড়াতেও আমি নিয়মিত যেতাম। ওখানেও পূজা উদ্বোধন করেছি। কাজ সেরে আবার কলকাতায় ফিরে আসতাম। এবার প্রয়োজনে কাছাকাছি কোথাও যাব, যাতে সহজেই কাজ সেরে আবার বরাহনগরে ফিরে আসতে পারি। আশা করছি, কঠিন সময়ের মধ্যেও এবারের পূজা ভালো কাটবে। আমার তরফে আনন্দবাজার অনলাইনের পাঠকদের শারদীয়ার শুভেচ্ছা। আপনাদের পূজা খুব ভালো কাটুক।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |