ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯ আশ্বিন ১৪৩১
সেনাবাহিনীর চিরুনী অভিযান কক্সবাজার থেকেই শুরু হোক
এম.এস. দোহা
প্রকাশ: Tuesday, 24 September, 2024, 9:46 PM

সেনাবাহিনীর চিরুনী অভিযান কক্সবাজার থেকেই শুরু হোক

সেনাবাহিনীর চিরুনী অভিযান কক্সবাজার থেকেই শুরু হোক

যৌথ বাহিনীর অভিযানে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ২৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ছুরিকাঘাতে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন এর নিহতের বিষয়টি অন্তবর্তীকালীন সরকারের জন্য এক ধরনের সতর্কবার্তা। 

মাদক সন্ত্রাস ও পর্যটনের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত এই জেলায় অভিযান এখন সময়ের দাবি। নচেৎ ষড়যন্ত্রকারী, সন্ত্রাসী ও রাঘব বোয়ালরা পেয়ে বসবে।
 
উল্লেখ্য বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে এই কক্সবাজারেই বহুল আলোচিত ওসি প্রদীপের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত  ক্যাপ্টেন সিনহা। যার নেপথ্যে ছিল কক্সবাজারের  মাদক সিন্ডিকেট। 

দেশের বহুল আলোচিত মাদক সম্রাট কক্সবাজারের আব্দুর রহমান বদি শেখ হাসিনা সরকারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বদির এমপির দলীয় মনোনয়ন হাতছাড়া হলেও পরবর্তীতে তার স্ত্রী শাহানারা বেগম তা কাভার করে নেন । ফলে কক্সবাজারের মাদক সিন্ডিকেট ও বৌদির সাম্রাজ্যের তেমন কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কারণ এমপি থেকে শুরু করে  নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার পর্যন্ত কক্সবাজারের  প্রায় শতাধিক জনপ্রতিনিধি পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। এই জনপ্রতিনিধিদের কল্যাণে দেশের ৬৪ জেলার তাদের মনোনীত ডিলারের মাধ্যমে মাদক সরবরাহ ও বিপণন চলমান। 

ইদানিং যৌথবাহিনীর তৎপরতায় এসব মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ডে ব্যাঘাত হচ্ছিল। 

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাত ৩ টায় চকরিয়ায় উপজেলার ডুলাহজরা ইউনিয়নের পুর্ব মাইজপাড়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে  সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জনকে হত্যার ঘটনা হয়তো তারই ধারাবাহিকতা।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লেফটেন্যান্ট তানজিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লেফটেন্যান্ট তানজিমের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ২০২২ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।

অভিযানে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে তিন ডাকাতকে আটক করেছে বলে আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। পাশাপাশি দেশে তৈরি একটি বন্দুক, ছয়টি গুলিও উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পূর্ব মাইজপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দিয়েছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ দল অভিযান চালায়। যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার এক ডাকাতকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। তবে ওই ডাকাত তখন অতর্কিতে তানজিমের মাথায় ও গলায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেনা কর্মকর্তা তানজিম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সেনাবাহিনীর অন্য সদস্যরা তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মাছ ব্যবসায়ী রেজাউলের বসতঘরে ডাকাতির প্রস্তুতির খবর আগেই ফাঁস হয়ে যায়। এ কারণে স্থানীয় লোকজন সেনাক্যাম্পে রাতেই খবর দিয়ে রাখেন। যখন ডাকাত দল রেজাউলের বাড়িতে হানা দেয়, তখন স্থানীয় পূর্ব মাইজপাড়া জামে মসজিদের মাইকে ডাকাতির খবর প্রচার করা হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী অভিযান চালালে সেখানে ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম নিহত হন। 

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহ আলমের বসতঘরের উঠানে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটে। জানতে চাইলে শাহ আলম  বলেন, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর ডাকাত দলের সদস্যরা পূর্ব দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সেনাবাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য তাদের পিছু নেন। পশ্চিম দিকে দুজন ডাকাত যেতে চাইলে তাদের একজনকে ধরে ফেলেন তানজিম সারোয়ার। এ সময় ওই ডাকাত তাঁকে মাথায় ও গলায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে অন্য সেনাসদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

নিহত সেনা কর্মকর্তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, সেনা কর্মকর্তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এরপর মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া  বলেন, সেনা কর্মকর্তা তানজিম সারোয়ার একাধিক ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন। তাঁর মরদেহ সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।

এদিকে বেলা সোয়া ১১টার দিকে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি চকরিয়া থানার পুলিশকে ডাকাত ধরতে চিরুনি অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন। চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব উর রাজা বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার (বন্দুক) উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাত গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চালাতে পুলিশ সুপার নির্দেশ দিয়েছেন।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status