ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
রোববার ১৫ জুন ২০২৫ ১ আষাঢ় ১৪৩২
নাহিদসহ তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Saturday, 27 July, 2024, 12:15 AM
সর্বশেষ আপডেট: Saturday, 27 July, 2024, 12:25 AM

নাহিদসহ তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

নাহিদসহ তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শুক্রবার রাতে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ওই তিন সমন্বয়ককে হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন অন্য দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও আব্দুল হান্নান মাসুদ।

সারজিস আলম বলেন, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

এর আগে বিকেলে আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ একটি বার্তা পাঠান। এতে তিনি বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় আমাকে, নাহিদ ভাই আর বাকেরকে গৃহবন্দি করেছে ডিবি পুলিশ। ওয়ার্ডের সামনে, হাসপাতালে ডিবি পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। হাসপাতালের সামনে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। আমাদের সব ধরনের কমিউনিকেশন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে এসেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।’


প্রসঙ্গত: এর আগে খবরে প্রকাশ হয়েছিল, নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে গেছেন সাদাপোশাকের এক দল ব্যক্তি। তাঁরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়েছেন বলে সেখানে উপস্থিত এক সমন্বয়কের স্বজন ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনজনকে তুলে নেওয়া হয়। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার। তাঁদেরকে কারা নিয়েছেন বা কোথায় নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য জানা যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিদের কেউ কেউ নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), আবার কেউ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্য পরিচয় দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান রাত সাড়ে আটটার দিকে বলেন, নাহিদ ইসলামসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়কের কাউকে তাঁরা নেননি। রাত সোয়া ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশের অন্য কোনো ইউনিট থেকেও তিন সমন্বয়ককে তুলে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি।

নাহিদ, আসিফ ও আবু বাকের—তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ে সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি দেওয়ার পর ১৯ জুলাই মধ্যরাতে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ায় এক বন্ধুর বাসা থেকে নাহিদকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। এক দিন পর পূর্বাচল এলাকায় তাঁকে ফেলে যাওয়া হয়। নাহিদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল আঘাতের চিহ্ন। এরপর থেকে তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অপর দুই সমন্বয়ক আসিফ ও বাকেরকেও এর মধ্যে ১৯ জুলাই তুলে নেওয়া হয়েছিল। পাঁচ দিন পর তাঁদের দুজনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় যেখান থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেখানে ফেলে যাওয়া হয়। এরপর থেকে আসিফও এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর সঙ্গে থাকছিলেন বাকের।

তিনজনকে তুলে নেওয়ার খবর জানাজানি হলে গণমাধ্যমকর্মীরা বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে যায়। নাহিদ হাসপাতালের ৭০৩ নম্বর কক্ষে এবং আসিফ ৩১১ নম্বর কক্ষে ভর্তি ছিলেন। নাহিদের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী আর আসিফের সঙ্গে বাকের ছিলেন।

হাসপাতালে উপস্থিত নাহিদের স্বজনেরা জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে একদল লোক এসে প্রথমে নাহিদকে তুলে নিয়ে যান। পরে আসিফ ও বাকেরকে নিয়ে যান।

নাহিদকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি এখন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সঙ্গে থাকা তাঁদের স্বজন ফাতিমা তাসনীম বলেন, বিকেলে তিনি নাহিদের কক্ষেই ছিলেন। হাসপাতালের যে ছেলেটি খাবার দিত, তাকে আটক করা হয়েছে, এমন খবর শুনে তিনি নাহিদের কক্ষ থেকে আসিফের কক্ষে যান। তখন চারজন ব্যক্তি আসিফ ও বাকেরকে ধমকাচ্ছিলেন।

ফাতিমা তাসনীম বলেন, ‘ওই ব্যক্তিরা আসিফ ও বাকেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানাহেঁচড়া শুরু করলে আমি ও হাসপাতালের নার্সরা তাঁদের বলি, রোগীদের ডিসচার্জ করা হয়নি। তখন ওই ব্যক্তিরা নার্সদের ইনচার্জকে বলেন, “আমাদের চেনেন? কাউন্টার টেররিজম সম্পর্কে আপনাদের ধারণা আছে?” এরপর কোনো কথা না শুনে তাঁরা আসিফ ও বাকেরকে নিয়ে যান। দুজনের মুঠোফোনও নিয়ে যান। এরপর জানতে পারি, নাহিদকেও তুলে নেওয়া হয়েছে।’

ঘটনার বিষয়ে আসিফ মাহমুদের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ সকাল সাতটার দিকে হাসপাতালে এসে আসিফ মাহমুদের কক্ষের সামনে গিয়ে অপরিচিত তিনজন মানুষকে দেখতে পান। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষও বাড়তে থাকে। ওই ব্যক্তিদের কেউ কেউ তাঁর পরিচয় জানতে চান।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ডিবি ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কয়েকজন এসে আসিফকে তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন জানিয়ে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘আমাকেও তাঁরা সরে যেতে বলেন। কিন্তু রোগীর প্রতি দায়িত্বের জায়গা থেকে সরিনি। তাঁরা রোগীকে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলছিলেন। আমি তাঁদের বলি, ডিসচার্জ না করে কোনো রোগীকে আমরা ছাড়তে পারি না। আসিফের শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে তিনি ডিসচার্জের উপযোগী ছিলেন না। তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও কিছু একটা ইনজেক্ট করা হয়েছিল। তিনি হাসপাতাল থেকে যেতে চাননি। আমরাও ছাড়তে চাইনি। কিন্তু তাঁদের চাপাচাপির কারণে বাধ্য হয়ে তাঁকে ডিসচার্জ অন রিস্ক বন্ড করতে হয়।’

চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীরা আমাকে জানান যে কাউন্টার টেররিজমের কর্মকর্তারা এসেছেন রোগী আসিফ মাহমুদকে নিয়ে যেতে। রোগী যেতে চাইছিলেন না, আমরাও ছাড়তে চাইনি। তাঁদের জোর করেই নিয়ে যাওয়া হয়।’

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status