কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের অন্তত পাঁচজন নেতা।
রোববার (১৪ জুলাই) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
পদত্যাগ করা ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখার গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক মাছুম শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখার মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক রাতুল আহামেদ ওরফে শ্রাবণ, কলাভবন ছাত্রলীগের এক নম্বর সহসম্পাদক মো. মুহাইমিনুল ইসলাম, আইন অনুষদ শাখার গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আশিকুর রহমান ওরফে জিম এবং রাসেল হোসেন।
ছাত্রলীগের এই পাঁচ নেতা নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
আশিকুর রহমান জিম তার পোস্টে লেখেন, ‘আমি আশিকুর রহমান জীম, মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করছি এবং আইন অনুষদ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করছি।’
মাছুম শাহরিয়ার তার পোস্টে লেখেন, ‘জীবনে অনেক পাপ করছি। পাপের বোঝা বয়ে নিয়েও চলেছি। কিন্তু রাজাকার হয়ে ছাত্রলীগ করার পাপ বয়ে নিয়ে যেতে চাই না। আমি, মাছুম শাহরিয়ার, সামাজিক অনুষদ ছাত্রলীগ এর গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করছি। ধন্যবাদ।’
মুহাইমিনুল ইসলাম লেখেন, ‘পদত্যাগ করলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবন শাখা ছাত্রলীগের এক নম্বর সহসম্পাদক পদ থেকে।
এদিকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে রাত ১১টার দিকে বিক্ষোভে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এসে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
রোববার (১৪ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।
মূলত এই বক্তব্যের প্রতিবাদে এ দিন রাতে বিক্ষোভে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বক্তব্যের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বের হন। মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন।