দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজারেই নেই চামড়ার ব্যাপারীরা!
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার যশোরের রাজারহাট। ঈদ পরবর্তী সময়ে এ বাজারের দিকে নজর থাকে দেশের শীর্ষস্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের। তবে এবার এ বাজার তেমন জমেনি; যে পরিমাণ পশু কোরবানি হয়েছে সে তুলনায় অনেকটাই ফিকে। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না চামড়া। অবশ্য আড়তদারদের দাবি, প্রথম হাট না জমলেও পরেরটি জমজমাট হবে এবং লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন ব্যসায়ীরা। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ পরবর্তী প্রথম হাটে কোনো হাঁক-ডাক নেই। কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী লবণ দেয়া এক থেকে দেড় হাজার কাঁচা চামড়া নিয়ে বসে আছেন হাটে; কোনও ক্রেতা নেই। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, হাট যেমন জমেনি তেমন চামড়ার দামও মিলছে না। তারা একেকটি গরুর চামড়া ৪০০ থেকে ৯০০ টাকায় কিনেছেন। লবণ দিতে গিয়ে খরচ হয়েছে আরো এক থেকে দেড়শ টাকা। কিন্তু হাটে প্রতি পিস চামড়ার দাম খরচের তুলনায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে কম বলছেন আড়তদাররা। সুখরঞ্জন দাস নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, গ্রাম থেকে ২০-৩০ টাকা দরে ছাগলের চামড়া ও ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে গরুর চামড়া কিনেছেন। লবণ ও শ্রমিক খরচ হয়েছে আরো এক থেকে দেড়শ টাকা। কিন্তু হাটে কোন ব্যাপারী আসেননি। স্থানীয় আড়তদাররা চামড়ার দাম বলছেন না। ছাগলের ভালো চামড়াটি সর্বোচ্চ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, আর বাকি সব ১০ থেকে ২০ টাকা দরে। গরুর চামড়া ভালোটা ৬০০ টাকা ও বেশির ভাগ চামড়া ১০০ টাকা দর বলছে। চামড়ায় কাটা থাকলে তা বাতিলের আওতায় পড়ছে। এতে করে ব্যবসার পুঁজি উঠানোই বড় দায় হয়ে পড়েছে। আব্দুস সালাম নামে অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, ১০০ পিস গরুর চামড়া এনেছিলেন। হাটে দাম পাচ্ছেন না। বাইরের ব্যাপারীরা আসেননি। হাটে চামড়াও ওঠেছে কম। সব মিলে তার ৩০ হাজার টাকার মতো লোকসান হবে। জাহাঙ্গীর আলম নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, যা হোক গরুর চামড়ার কিছু দাম বলছে। কিন্তু ছাগলের চামড়ার কোনো দাম নেই। অনেকে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে হাটেই ফেলে চলে গেছে। আমি কোনো রকমে ২০ টাকা দরে ছাগলের চামড়া বিক্রি করেছি। বিগত কয়েক বছর ধরে চামড়া ব্যবসায় কেবল লোকসানই গুনতে হচ্ছে। আগামীতে আর গ্রামে কেউ চামড়া কিনতে যাবে বলে মনে হয় না। কোরবানির পর চামড়া ফেলে দিতে হবে। এছাড়া উপায় থাকবে না। স্থানীয় আড়তদার হাসানুজ্জামান হানু বলেন, গতকাল (সোমবার) কোরবানি হয়েছে। কাল সারাদিন চামড়া সংগ্রহের পর রাতে লবণের কাজ হয়েছে। ফলে আজকের হাট জমেনি। অল্প কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চামড়া এনেছেন, তারা নির্ধারিত দামেই চামড়া বিক্রি করেছেন। নিম্নমানের চামড়া থাকলেতো তার দাম পাওয়া যায় না। তবে আগামী শনিবারের হাট জমবে এবং ব্যবসায়ীরা তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন। রাজারহাট চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, আগামী পাঁচটি হাটে কমপক্ষে এক লাখ পিস চামড়া বিক্রি হবে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |