উপকূলের কুরবানী: চোখে কষ্টের ছাপ তবুও তাদের মুখে হাসি
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
![]() উপকূলের কুরবানী: চোখে কষ্টের ছাপ তবুও তাদের মুখে হাসি রিমালের এতো দিন অতিবাহিত হলেও ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি। এর মধ্যে কুরবানী তো তাদের কাছে শুধুই স্বপ্ন; নিজের ঘরের চুলো এখনো জ্বালাতে পারেননি বকুল। তেমনি কুরবানীর মাংস না পেলেও যে বকুলের চুলো জ্বলবেনা; তাই কুরবানীর মাংস দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে মুখ বেঁধে চলে আসেন বকুল। চোখে কষ্টের ছাপ রয়েছে। চোখ যেন পানিতে টলটল করে। শুধু বকুলই নয় সাফিয়া বেগম, মমতাজ, পারুল বেগম, লুৎফা বেগমসহ একাধিক নারীর চোখে পানি আর কষ্টের ছাপ। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা। সকলের চোখে পানি টলটল করলেও মাংস হাতে পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে। তাদের চোখে পানি থাকলেও মুখে হাসি। কুরবানী আসলেই এ দিনে এক টুকরো মাংসের জন্য বিত্তশালীদের দুয়ারে দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকে অনেক দরিদ্র মানুষ। কিন্তু আজ ব্যতিক্রম; স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দরিদ্রদের দুয়ারে গিয়ে তাদের হাতে মাংস পৌঁছে দেয়ায় তারা অনেক খুশি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন 'সাদাকাহ' ও জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ' পাথরঘাটা উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন'র সমন্বয়ে বরগুনার পাথরঘাটায় এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করে। আর আয়োজনের মাধ্যমে শতাধিক পরিবারের মাঝে কুরবানীর মাংস দেয়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মানবিক নারী তাসলিমা রহমান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দৃষ্টি মানবকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সোহাগ আকন, স্বপ্ন পুরন ফাউন্ডেশনের উপজেলা সভাপতি শোয়েব তাসিম, পাথরঘাটা পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাকন, উপকূল অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন প্রমুখ। সেতারা বেগম, মমতাজ বেগম ও পারুল বেগম বলেন, আমরা এই মাংস পেয়ে খুব খুশি। এক বেলা মাইয়া-পোলা নিয়া তৃপ্তি সহকারে খাইতে পারমু। যারা আমাগো এই মাংস দেছে তাদের জন্য দোয়া করি। তারা আরও বলেন, অনেক জায়গায় মাংস দেয়া হয় তা খুবই অল্প, এখানে যারা দিছে তা দিয়া ভালই খাইতে পারমু। বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. নুরুল ইসলাম ও সিরাজুল হক মোল্লা বলেন, আমরা আসলেই এই ব্যতিক্রম আয়োজন দেখে মুগ্ধ হয়েছি। সেই প্রবাসে থেকে তাদের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে দুস্থদের মাঝে সহায়তা দিয়ে আসছে এটি আসলেই ভাল উদ্যোগ আমরা চাই এ আয়োজন অব্যাহত থাকুক। এভাবে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত। শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, এটি যেমন ব্যতিক্রম, তেমনি আমরা বাছাই করে বিধবা এবং স্বামী পরিত্যক্তাদের এ মাংস বিতরণ করছি। কারন তারা সব সময়ই অবহিত থাকে পাশাপাশি অন্যদের মতো খেতেও পারে না। এ জন্যই আমরা ভিন্ন চিন্তা করে তাদের বাছাই করে দিচ্ছি। কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম কাকন বলেন, আমি নিজে ধন্য মনে করছি এ কারনে যে এমন আয়োজন আমার ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডের দুস্থদের মাঝে মাংস বিতরণ করা হয়েছে। যে পরিমাণ মাংস দেয়া হয়েছে তা পরিবারের সদস্যরা তৃপ্তি সহকারে খেতে পারবে। সাদাকাহ'র প্রধান নির্বাহী মাওলানা শহিদুল্লাহ বলেন, সাদাকাহ ইউএসএ মূলত স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন। সবার সহযোগিতাকে তৃনমূলের অসহায় মানুষের কাছে পৌছে দিতে কাজ করি আমরা। প্রতিবছরের মত এবারো দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার ১৬ টি স্থানে দরিদ্র হতদরিদ্রদের মাঝে কোরবানীর মাংশ বিতরণ করা হয়েছে।
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |