রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে গুলি চালিয়ে সহকর্মী পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হককে হত্যায় অভিযুক্ত কাওসার আলী ‘মানসিক রোগে’ আক্রান্ত বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন সাথী। এজন্য তাকে কয়েকবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানোও হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিলুফার ইয়াসমিন সাথী বলেন, ‘কাওছার মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে যেতেন৷ সরকারিভাবেই তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে কয়েকবার। চিকিৎসার কাগজপত্রও আমার স্বামীর কাছে আছে।’
দাম্পত্য সম্পর্কে কোনো সমস্যা ছিল না উল্লেখ করে সাথী বলেন, ‘মানসিক অবস্থা খারাপ হলে পরিবারের সঙ্গে কম যোগাযোগ করতেন এবং কথাও কম বলতেন।’
কাওছারের মা মাবিয়া খাতুন জানান, তার ছেলে গত চার-পাঁচ দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে কম কথা বলতো। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে এমনিতে খুব ভালো। তার মাথায় কিছু সমস্যা আছে। কাওছারের সঙ্গে আমার শনিবার রাত ৮টায় শেষ কথা হয়। আমার সঙ্গে ভালোভাবেই কথা বলেছে। মা কেমন আছো, আব্বা কেমন আছে জিজ্ঞেস করেছে। তবে কয়েকদিন ধরে বাড়িতে একটু কম কথা বলতো।’
কাওছার মাদকাসক্ত কিনা জানতে চাইলে পরিবারের সদস্যরা অস্বীকার করে বলেন, তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত। মাঝে মাঝে তিনি অসুস্থ হয়ে যেতেন। মাদকের সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নাই।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে দায়িত্বরত এক কনস্টেবলকে গুলি করেন কাওছার আলী। পুলিশ বলছে, দুজনের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে কনস্টেবল কাওছার আলী নিজের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকেন তার সহকর্মীকে। গুলিতে ঘটনাস্থলে মারা যান কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম। আহত হন জাপান দূতাবাসের একজন গাড়ির চালক।
এই ঘটনায় রবিবার নিহত মনিরুলের ভাই মাহাবুবুর হক বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় কাওছারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন কাওছার। তার পিতার নাম হায়াত আলী।