সালিশি বৈঠকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটার সিদ্ধান্ত, পরে বাতিল
নতুন সময় প্রতিনিধি
প্রকাশ: Sunday, 2 June, 2024, 6:21 PM
ঘুষ নেয়ার অভিযোগে টাঙ্গাইলে সালিশি বৈঠকে রথিন্দ্রনাথ সরকার কাজল নামে এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ২০ বার জুতাপেটা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে ঘুষের টাকা ফেরত দিতে চাওয়ায় জুতাপেটার শাস্তি বাতিল করে স্থানীয় মাতব্বররা।
শুক্রবার (৩১ মে) রাত ১০টায় টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের অলোয়া তারিনী এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। রথিন্দ্রনাথ সরকার ওই এলাকার অলোয়া তারিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, সম্প্রতি অপ্রাপ্ত বয়সী ছেলে মেয়ের বিয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার প্রতিশ্রুতিসহ অভিভাবকদের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেন অভিযুক্ত রথিন্দ্রনাথ সরকার কাজল।
এ বিষয়ে স্থানীয় মাতব্বররা সালিশের আয়োজন করলে ঘুষের ৫০ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন রথিন্দ্রনাথ। পরে সালিশি বৈঠকে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলেন অন্যথায় ২০ বার জুতাপেটা করার সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরতের কথা দেয়ায় পরবর্তীতে সালিশি বৈঠকের জুড়ি বোর্ডের নেয়া ২০ বার জুতাপেটা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
সালিশি বৈঠকে স্থানীয় মাতব্বর আজগর আলীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আকাব্বর হোসেন, দেলোয়ার প্রিন্সিপাল, অভিযোগকারী ছেলের বাবা জামাল মিয়া, মেয়ের বাবা আনোয়ার হোসেনসহ গণ্যমান্য মাতব্বর ও প্রায় তিন শতাধিক এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজল মাস্টারসহ কয়েকজন ভুয়া মাতব্বর এ ধরনের অপরাধ দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছেন। নীরিহ মানুষের কোন সমস্যা দেখলেই তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন। শুধু সামাজিকভাবে নয় আইনানুগ ভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত। কাজল মাস্টার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েও কিভাবে এ ধরনের অপরাধ করছেন বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রশাসনসহ সকল মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
সালিশি বৈঠকে অভিযোগকারী ছেলের বাবা ও মেয়ের বাবা বলেন, ভুয়া মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এনে ও জেল জরিমানার ভয় দেখিয়ে আমাদের দুই অভিভাবকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন কাজল মাস্টার। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি টাকা খাওয়ার জন্য ঘটনাটি ছিল কাজল মাস্টারের সাজানো। এ কারণে আমরা দুই পরিবার সমাজের মাতব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করি।
মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের দেয়ার জন্য নেয়া ৫০ হাজার টাকা কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের কাছে দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রথিন্দ্রনাথ সরকার কাজল।
এ বিষয়ে ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফারুক হোসেন জানান, অপ্রাপ্ত বয়সী ছেলে ও মেয়ের বিয়ের বিষয়ে একটি সালিশ হয়েছিল। তবে সেই সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম না। ওই ঘটনায় কাজল মাস্টার আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালানোর জন্য আমি কাজল মাস্টারকে ধরবো।