কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার চর নেওয়াজি বিএল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরিক্ষায় পা দিয়ে লিখেই বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ- ৪.৫০ পেয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহজাহান।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের দরিদ্র কাঠমিস্ত্রী মো. ফরিদুল হক ও রাশেদা বেগম দম্পত্তির তৃতীয় পূত্র প্রতিবন্ধী শাহজাহান। অভাব অনটনের মধ্য বেড়ে ওঠা শারীরিক প্রতিবন্ধি শাহজাহানের দুটি হাতই শক্তিহীন অচল শাহজাহানের খেলাধুলা ও পড়ালেখার প্রতি ছিল খুব আগ্রহ থাকায় বড়ভাইয়ের প্রচেষ্টায় পা দিয়ে লিখেই প্রাইমারির গণ্ডি পাড় হয় শাহজাহান। পরে ভর্তি হয় দুই কিলোমিটার দূরের স্কুল চর নেওয়াজী বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই স্কুল থেকেই শাহাজাহান পা দিয়ে লিখেই এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ- ৪.৫০ পেয়েছে। তার এই ফলাফল শুনে পরিবারের লোকজন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্র- ছাত্রী এবং সর্বপরি গ্রামবাসি সকলেই মহাখুশি।
শাহাজাহান তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি ভাবতেও পারিনি আমি এতো ভালো রেজাল্ট করবো।আমার বড়ভাই আর স্কুলের শিক্ষকরা সহযোগিতা না করলে এমন রেজাল্ট করা সম্ভব ছিলো না।
শাহাজাহানের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. শফিউল আলম বলেন, শাহাজান অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। ও মেধাবী ছিলো তার বড়ভাই কষ্ট করে মোটর সাইকেলে যোগে শাহাজাহানকে স্কুলে নিয়ে আসাত নিয়ে যেত। সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পেলে সে লেখাপড়া করে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবে।
শাহজাহান বড় হয়ে কী হতে চায় এ প্রশ্ন করা হলে শাহজাহান কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে জানায়, আমি প্রতিবন্ধী। বাইরে পড়ালেখা করার সামর্থ আমার নাই। দেখি কতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারি।
শাহজাহানের বাবা মো. ফরিদুল হক বলেন, আমাদের অভাবের সংসারে ছেলেদের পড়ালেখা করানোর কথা চিন্তাই করতে পারিনি। এছাড়া শাহজাহান ছিল জন্মগত ভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ওর ইচ্ছা আর ওর বড় ভাইদের প্রচেষ্টায় পড়ালেখা করানো সম্ভব হয়েছে। ওর স্যাররাও অনেক সহযোগিতা করেছে। এজন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।