মহারাজ-মিরাজের নেতৃত্বেই তুষ্ট পিরোজপুরবাসী
বিপ্লব বিশ্বাস
|
মহারাজ-মিরাজের নেতৃত্বেই তুষ্ট পিরোজপুরবাসী যতই দিন যাচ্ছে পিরোজপুর রাজনীতিতে নুতন মেরুকরণের সৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৫ বছর ধরে পিরোজপুরে খলিফা পরিবারের এক চেটিয়া দখলে থাকলেও গত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে তাতে ভাটা পরে। বিগত দিনে খলিফা পরিবারের জেলা জুড়ে ব্যাপক আধিপত্য থাকলেও। বর্তমানে তাদের জানমত, লোকবল, সব কিছুই অনেকাংশে খর্ব হয়েছে। যে কারণে তারা এখোন কোটঠাসা অবস্থায় আছে। তবে একসময়ে খালিফা পরিবার তথা সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তাদেরই অনুসারী দুই সহোদর সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ ও তার ছোট ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভান্ডারিয়া আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম তাদের উত্তরসুরী হিসেবে গোটো পিরোজপুর জেলায় এখন রাজ করছে। কেউ কেউ বলেছেন, তাদের মহানুভবতা, সৎ রাজনিতী, পরোপকারী, দানশীল, হওয়ায় তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড উচ্চশিকরে পৌঁছে দেয়। জানা গেছে, বর্তমানে জেলার আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ একেএম আউয়াল থাকলেও কার্যত তিনি এখোন ঢাকায়ই অবস্থান করে দলীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। সংসদ নির্বাচনে পরপর দুইবার তিনি আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে হেরে যাওয়ায়-তাদের আরো বেকায়দায় পরতে হয়েছে। যার ফলস্বরম্নপ পিরোজপুরে অঘোষিত ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন দুই সহোদর। মূলত মিরাজের নেতৃত্ব, সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা এবং সৎ রাজনিতীর বহিঃপ্রকাশে এলাকায় তাকে ম্যাজিক ম্যান হিসেবে পরিচিতি পাইয়ে দেয়। তাছাড়া তার অত্র এলাকায় গরীব,দুঃখী মেহনতী মানুষের আশা ভরসার অশ্রয় স্থল হিসেবে পরিচিত রয়েছে গোটা পিরোজপুর জুড়ে। অত্র এলাকার জনগণই চায় তাদের হাতেই নেতৃত্ব। সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া-কাউখালী-নেছারাবাদ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজের কাছে হেরে যায় জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মঞ্জু এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন।স্ব^তন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৯৪ হাজার ৫৪৪ ভোট। আর নৌকা প্রতীকে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৯৬ ভোট। সে হিসাবে ৩২ হাজার ৫৪৮ ভোটে হেরে গেছেন মঞ্জু। ৃ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৯৮৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হয়ে প্রথমবারের মতো পিরোজপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯১ সালে, ১৯৯৬ সালের জুনে, ২০০১ সালে, ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এই আসনে জয় পান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মামলার কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারেননি। সব মিলিয়ে এই আসন থেকে ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এর আগে কখনো নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হননি। শেষ পর্যন্ত নিজের ‘শিষ্যে’র কাছে পরাজয় মানতে হলো তাকে। স্থানীয়রা বলেন, রাজনীতিতে তার প্রকৃত অর্থে হাতেখড়ি হয় মঞ্জুর হাত ধরেই। সে কারণে মহারাজকে সবাই মঞ্জুর শিষ্য বলে থাকেন। এবারের নির্বাচনে মহারাজ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন তারই রাজনৈতিক ‘গুরম্ন’ মঞ্জুকে। শেষ পযর্ন্ত গুরুকে হারিয়েই জাতীয় নির্বাচনে জয় পান তিনি। অন্যদিকে, মিরাজুল ইসলামও পরপর দুইবার বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষায় অবদান রাখায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পরা রোধ, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আসবাব পত্র প্রদান, শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, দরিদ্র শিশুদের পোষাক সরবরাহ এবং প্রতি বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ৪ হাজার টাকা প্রদান করছেন। এ ছাড়া তিনি উপজেলার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বঙ্গবন্ধু কর্নার ও মুক্তিযোদ্ধা কর্নার তৈরি করে দিয়েছেন। মিরাজুল ইসলাম ২০১৪ থেকে ২০১৯ এর জানুয়ারী পর্যন্ত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে নির্বাচনে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সময় তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ভান্ডারিয়া উপজেলার ৫০ হাজার পরিবারে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেন। এ ছাড়া ভান্ডারিয়া উপজেলা হাসপাতালে করোনাভাইরাস স্যাম্পল কালেকশন বুথ করে দেন। এ ব্যাপারে মিরাজুল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের পরিচালক এহসাম হাওলাদার জানান, আর্থ মানবতা সেবায় এ ফাউন্ডেশনটি মানুষের বিপদ ও আপদে বন্ধু হিসেবে কাজ করে যাচেছ । যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে সংগঠনটি। ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এ সংগঠনের সাথে যুক্ত। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |