ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ ১৩ চৈত্র ১৪৩১
স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার আসলে কতটুকু?
তান্ইয়া নাহার
প্রকাশ: Thursday, 16 May, 2024, 10:28 AM

ছবি: তান্ইয়া নাহারতান্ইয়া নাহার

ছবি: তান্ইয়া নাহারতান্ইয়া নাহার

একজন বিবাহিত নারী, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি সম্পত্তির মালিক হতে পারেন। বাংলাদেশের প্রধান দুই ধর্মাবলম্বীর স্ত্রীদের তাদের স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকারের ধরণ দুরকম।

আমাদের দেশে প্রচলিত মুসলিম ব্যক্তিগত (শরিয়াহ্) আইনে কোরআন, সুন্নাহ ও ইজমার উপর ভিত্তি করে মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়ে থাকে। এভাবে বণ্টন করাকে ফারায়েজ বলা হয়।

এই সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা নিসাতে সুস্পষ্ট ও বিস্তারিত নির্দেশনা আছে। তাই এই বিষয়ে সকল মুসলিমের অবগত হওয়া উচিত। এতে কোনো মুসলমান পুরুষ অথবা নারী মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী তার ভাগে কতটুকু সম্পত্তি পাবেন, সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন।

মুসলিম আইনে বিবাহের শুরুতেই দেনমোহর এবং বিবাহ বলবৎ থাকা অবস্থায় জীবিত স্বামীর কাছ থেকে উপযুক্ত ও যুক্তিসংগত ভরণপোষণের দাবিদার প্রতিটি স্ত্রী।

এ ছাড়া মৃত স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তিতেও তার অধিকার রয়েছে সুস্পষ্টভাবেই। আসলে উত্তরাধিকার বা ওয়ারিশের প্রশ্নই আসে সম্পত্তির মালিকের মৃত্যুর পর। জীবদ্দশায় ব্যক্তি তার নিজের সম্পত্তি নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী ব্যয়, বিক্রয় বা ব্যবহারের অধিকার রাখেন। এ ছাড়া নিয়ম মেনে দান (হেবা) বা উইল করার অধিকার রাখেন।

কোন মুসলিম নারীর স্বামীর মৃত্যু হলে, আর তাদের কোনো সন্তান না থাকলে, তিনি তার স্বামীর সমুদয় সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ পাবেন। যদি এক্ষেত্রে একাধিক স্ত্রী থাকেন তাহলে সবাই মিলেই এক চতুর্থাংশ বা ১/৪ অংশ পাবেন। আর যদি তাদের সন্তান থাকে তাহলে স্ত্রী পাবেন এক-অষ্টমাংশ (১/৮ অংশ বা আট ভাগের এক ভাগ)। এক্ষেত্রেও যদি একাধিক স্ত্রী থাকেন, তাহলে প্রত্যেকে মিলেই এক অষ্টমাংশ পাবেন, এর বেশি নয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘স্ত্রীর জন্য তোমাদের ত্যাজ্য সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ, যদি তোমাদের কোনো সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তাহলে তাদের জন্য হবে ওই সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ।

এ আইনে ছয় ব্যক্তিকে বলা হয় প্রাথমিক বা মৌলিক উত্তরাধিকারী। এরা হলেন- বাবা, মা, স্বামী, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা। এ ছয়জনকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না বলে এদেরকে বলা হয় প্রাথমিক বা মৌলিক উত্তরাধিকারী। আর এ ছয় জনের মধ্যে স্ত্রী একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যদি কেউ তাকে তার এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চান, তাহলে তিনি পারিবারিক আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন এবং মামলা রুজু করে নিজের অধিকার আদায় করতে পারেন।

হিন্দু আইনে স্বামীর জীবিতাবস্থায় তার সম্পত্তির উপর স্ত্রীর কোনোরকম অধিকার নেই। কেবল ভোগ করতে পারবেন।

সম্পত্তিতে হিন্দু মহিলার অধিকার আইন, ১৯৩৭ পাশ হওয়ার পর মৃত ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী এক পুত্রের সমান অংশ জীবনস্বত্ব পান। আর এ জীবনস্বত্বের মানে হলো, স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী তার নিজের জীবদ্দশায় স্বামীর সম্পত্তি ভোগ করতে পারবেন, তবে এ সম্পত্তি তিনি কোনোভাবেই বিক্রি করতে পারবেন না, অন্যের কাছে হস্তান্তর করতেও পারবেন না। এমনকি নিজের সন্তানকেও দান করতে পারবেন না। তাঁর মৃত্যুর পর এটা বিধবা সম্পত্তি বা ‘উইডোজ এস্টেট’ হিসেবে মৃত স্বামীর পুরুষ উত্তরাধিকারের দখলে চলে যায়।

লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status