অতীত ‘উত্তেজনা’ ভুলে সামনে তাকানোর মন্ত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র
নতুন সময় ডেস্ক
|
অতীত ‘উত্তেজনা’ ভুলে সামনে তাকানোর মন্ত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। এ সময় ঢাকা সফরের আরেকটি কারণের কথা বলেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা ভাষায়, বাংলাদেশে করের আওতা কীভাবে বাড়ানো যায়, যার ভিত্তিতে সব বাংলাদেশি তার ভাগের দেনাটা পরিশোধ করতে পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য সম্প্রতি তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মন্ত্রী (পররাষ্ট্রমন্ত্রী)। এবারের সফরের অভিজ্ঞতাকে ‘চমৎকার’ বলে বর্ণনা করেন তিনি। লু-সাবের বৈঠকে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা: পরিবেশ ও জলবায়ু সুরক্ষায় পরিবেশ সুরক্ষার নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে কীভাবে কাজ করা যায় তা নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ডোনাল্ড লুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বুধবার সচিবালয়ে সাবের হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকের পর পরিবেশমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। শুরুতেই তিনি বলেন, “আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছি, অতীতের কোনো বিষয় নিয়ে কথা হয়নি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুবিধার্থে এটা আগেই জানিয়ে রাখলাম।” জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মানবাধিকার ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। অবাধ, নিরপেক্ষ ও নির্বিঘ্ন নির্বাচনের স্বার্থে ভিসানীতিতে কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে নির্বাচনের পাঁচ মাসের মাথায় ডলান্ড লুর এবারের সফরে সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ এবং আমেরিকার মধ্যে যে সম্পর্ক আছে এটাকে আমরা কিভাবে আগামী দিনে এগিয়ে নিতে পারি। সেখানে সার্বিকভাবে যে বিষয়গুলোতে আমাদের অবস্থান অভিন্ন, যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং আমেরিকা কীভাবে যৌথভাবে কাজ করতে পারে মূলত আমরা সেটা নিয়ে আলাপ করেছি। “জলবায়ু নিয়ে কথা বলার সময় পরিবেশ, বন ও জীব বৈচিত্র্যের বিষয়গুলো চলে আসে। এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আগামী দিনে আমরা একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করব। সেজন্য হয়ত আমাদের একটা ওয়ার্কিং গ্রুপের মতো কিছু একটা থাকতে পারে। এখানে আমরা পাঁচ বছরের একটা কর্মসূচি হাতে নেব। এই কর্মসূচির অধিনে প্রতিবছর কী কী কাজ হবে সেটা থাকবে।” পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কর্মসূচিতে আমেরিকার প্রাইভেট সেক্টরেরও আগ্রহ রয়েছে। আমাদের যে মুজিব ক্লাইমেট প্রসারিটি প্ল্যান আছে, এর কিছু অংশে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর আগ্রহ রয়েছে।” ভবিষ্যতে পরিবেশ ও জলবায়ু সুরক্ষায় বিনামূল্যে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার স্যাটেলাইট ইমেজের সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান সাবের। তিনি বলেন, “পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে আজকের আলোচনায় আমাদের দুজনের অবস্থান ছিল অভিন্ন। শুধু আর্থিক সহযোগিতা নয়, গবেষণা ও কারিগরি তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নাসার বেশকিছু স্যাটেলাইট আছে, বর্তমানে এরা বেশকিছু দেশে তথ্য দিচ্ছে। আগামীতে হয়তো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য তারা স্যাটেলাইটের এসব তথ্য দেবে। বাংলাদেশের বিষয়টাও তারা বিবেচনা করবে এবং এটা হয়তো আমরা খুব কম মূল্যে অথবা বিনামূল্যে পাব। “কোন জায়গায় বন উজাড় হচ্ছে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা কোথায় বাড়ছে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এর তথ্যগুলো আমরা রিয়েল টাইমে পাব। এটা হবে আমাদের জন্য অনেক বড় একটা বিষয়। স্মার্ট এগ্রিকালচারের ক্ষেত্রে তাদের সাথে আমাদের একটা কোয়ালিশন রয়েছে। এসব বিষয়ে একটা ভালো ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আজকের এই আলোচনার ভিত্তিতে আগামী দিনে আমরা বসে কর্মক্ষেত্রগুলো সুনির্দিষ্ট করব।” তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |