গাজীপুরে অস্ত্রাঘাতে ল্যাপটপ মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনতাই
ফাহিম ফরহাদ, গাজীপুর
প্রকাশ: Saturday, 11 May, 2024, 7:39 PM
গাজীপুরে অস্ত্রাঘাতে ল্যাপটপ মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনতাই
ছিনতাইকারির অস্ত্রাঘাতে প্রায় দেড় লাখ টাকা মূল্যের মালামাল হারিয়ে নিঃশ্ব আলআমিন। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে একটি পায়ে করে দেয়া হয় গভীর ক্ষত। সেই পা নিয়ে শঙ্কিত বলেও জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার বরিশ্বর এলাকার আহাদ চৌধুরির ছেলে আল আমিন চৌধুরি।
জানা যায় প্রতিদিন গাজীপুরের মিরের বাজার এলাকার নিজ কর্মস্থল থেকে থ্রীহুইলার ইজিবাইক (অটো) যোগে স্টেশন রোড হয়ে টংগী পূর্ব থানার অধিনস্ত গাজীপুরা এলাকার অস্থায়ী বাসায় ফেরেন আল আমিন। এ পর্যন্ত ঠিক থাকলেও ভিন্ন এক দিন ছিলো গত সোমবার (৬মে), সন্ধ্যা তখন ঘনিয়ে আসছে। প্রতিদিনের ন্যায় সেদিনও কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরার উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা করেন চাকুরিজিবি আল আমিন (৩৫)।
তাকে বহনকারী থ্রিহুইলারটি পূবাইল রেল ক্রসিং পার হয়ে কেথারসিস হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছায়। ঠিক তখনি পূর্ব পরিকল্পিত যাত্রীবেশে ঔঁতপেতে থাকা কয়েকজন থ্রিহুইলারটি নির্জন স্থানে থামানোর ইঙ্গীত করেন। সন্দেহবসত কারন জানতে চাইলে দেশিয় অস্ত্রের সম্মূখে আল আমিন ততক্ষণে বুঝতে পারেন ছিনতাই কারির কবলে পড়েছেন তিনি। ছিনিয়ে নেয়া হয় তার সাথে থাকা লাখ টাকারও অধিক মূল্যের একটি স্লিম লেপটপ ও ৪০হাজার টাকা মূল্যের স্মার্টফোনসহ নগদ অর্থ। এতেই ক্ষান্ত হয়নি ছিনতাইকারিরা।
আল-আমিন ছিনতাইকারিদের ধাওয়া করে যেন পিছু না নিতে পারেন সে জন্যে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয় আল আমিনের একটি পা। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ফেলে দেয়া হয় রাস্তার পাশে। এ ঘটনার পর পথচারিরা রাস্তা থেকে আলআমিনকে তুলে নিকটস্থ চিকিৎসালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যে পাঠায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক পরিবারের সহায়তায় উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে স্থানান্তর করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সেখান থেকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও সব শেষ নেয়া হয় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু) হাসপাতালেও। পায়ে অস্ত্র পাচার শেষে বেশ কয়েকদিন যাবৎ এখন তিনি রয়েছেন পূর্ণ শয্যাশায়ী। চিকিৎসকের পরামর্শ বেঁধে দেয়া সময়ে আরও এক দফায় তার পা-য়ে করতে হবে অস্ত্র পাচার। তবুও অনিশ্চয়তার ভাজ এখন আলআমিন ও তার পরিবারের সদস্যদের কপাল জুড়ে।
জানা যায় আল আমিনের আয়ের উপর নির্ভরশীল স্ত্রী-সন্তান ও তার পিতামাতাসহ ভাই বোন। তিনি জানান প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে ছিনতাইকারিরা। এদিকে চিকিৎসা ব্যায়ভার বহন করে শহরের ব্যায়বহুল খরচ মিটিয়ে সুস্থ জীবণে ফেরা নিয়ে রয়েছেন নানা দুশ্চিন্তায়। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভাইবোনেরা বলছেন মালামাল নেয়ার পরও আমাদের ভাইয়ের উপর যে অত্যাচার করা হয়েছে সরকারের কাছে আমরা তার বিচার চাই।
চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে এ বিষয়ে টংগী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন আল আমিন। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের কাছে পরিবার ও ভূক্তভূগী আল আমিনের দাবি অচিরেই ঘটনার সাথে জরিত ছিনতাইকারিদের আইনের আওতায় এনে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারপূর্বক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এ বিষয়ে টংগী পূর্ব থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বলেন অভিযোগ পর্যালোচনা করে শীঘ্রই আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।