মসজিদের মুসল্লিদের পক্ষ নেওয়াতেই খুন হন সোহেল চৌধুরী
নতুন সময় ডেস্ক
|
নব্বই দশকের চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি ৬ আসামি পেয়েছেন বেকসুর খালাস। ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার (৯ মে) এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকী। দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দণ্ডিত এই তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ সাজার পরোয়ানা জারি করেছেন। বেকসুর খালাস পেয়েছেন তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, ফারুক আব্বাসী, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। বনানীর ১৭ নম্বর রোডে অবস্থিত আবেদিন টাওয়ারের সাত তলায় ছিল এই ট্রাম্পস ক্লাব। ঘটনার দিনই সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার সূত্রপাত প্রসঙ্গে চার্জশিটে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই ট্রাম্পস ক্লাবে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর একটি ঘটনায় বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এরই প্রেক্ষিতে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এবং ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বিরোধ শুরু হয়। সেদিন রাতে সোহেল চৌধুরীকে ক্লাব থেকে বের করে দেন আশীষ রায় চৌধুরী। ক্লাবে আর না আসার জন্যও হুমকি দেওয়া হয়। প্রতিশোধ নিতে হত্যা করা হয় নায়ক সোহেল চৌধুরীকে। ২৪ জুলাই ছাড়াও কয়েকবারই সোহেল চৌধুরীর সাথে ট্রাম্পস ক্লাবের অতিথি ও কর্মীদের ‘গোলমাল’ হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ক্লাবটিতে অসামাজিক কার্যকলাপ, নাচ গান ও মদ্যপান করা হত। এই ক্লাবের পশ্চিম পাশে ছিল একটি জামে মসজিদ। ক্লাবের কার্যক্রম বন্ধে মসজিদের মুসল্লিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন সোহেল চৌধুরী। মসজিদ কমিটির লোকজন নিয়ে তিনি ক্লাব বন্ধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন বলে মামলাটির অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। সে সময় ক্লাবের কাজ ব্যাহত হলে তাঁকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় আসামিরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্লাবের নিচের দরজার সামনে উপুড় হয়ে পড়া ছিল নায়ক সোহেল চৌধুরীর লাশ। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের দিন সোহেল চৌধুরী ক্লাবে ঢুকতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। পরে রাত তিনটার দিকে আবার সাত-আটজন লোকসহ ক্লাবের সামনে আসেন তিনি। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান। পেশাদার খুনিদের দিয়ে গুলি করানো হয় তাঁকে। মামলার এক সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেছেন, এ সময় তাঁর পেটে গুলি লাগে। অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান তিনি। তার সাথে থাকা আরেও দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |