পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দিল্লি সফর, আলোচনার বিষয় নিয়ে যা জানা গেল
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
অভিন্ন নদীর পানিবন্টন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, বিনিয়োগের মতো বিষয় হাছান মাহমুদের সফরের আলোচনায় থাকার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে প্রতিবেশী ভারতে যাচ্ছেন হাছান মাহমুদ; এই সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে দুই দেশের মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার রাতে নয়া দিল্লি রওনা হবেন হাছান মাহমুদ। এর আগে দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জয়শঙ্করের পাশাপাশি ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোবালের সঙ্গেও তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাছান মাহমুদ ঢাকা থেকে সরাসরি দিল্লি গেলেও ফিরবেন কলকাতা হয়ে। কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এবং অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধী সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন তিনি; বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে একটি সেমিনারে। অভিন্ন নদীর পানিবন্টন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, বিনিয়োগের মতো বিষয় হাছান মাহমুদের সফরের আলোচনায় থাকার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বৈঠকে উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন এবং ভবিষ্যৎ সম্পৃক্ততার এজেন্ডা ঠিক করবেন। এসব বিষয়ের সঙ্গে দুই দেশেরই প্রতিবেশী মিয়ানমারের পরিস্থিতিও স্বাভাবিকভাবে আলোচনায় আসবে বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান। মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে মঙ্গলবার তিনি বলেন, “মিয়ানমার ইস্যুতে আমরা আগেও ভারতের সহযোগিতা চেয়েছি, এবারেও এই বিষয়ে আলোচনাটা স্বাভাবিক।” সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেছেন, “আসন্ন সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন বিষয়ে সামগ্রিক আলোচনা হবে। তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি নিয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করছি।” তিনি বলেন, “তিস্তা নিয়ে চীনের প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে কিনা তা এই মুহূর্তে এভাবে বলা যাচ্ছে না। যদি ভারত এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কিছু জানতে চায়, তখন আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব।” পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে বৈঠকের পর হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। “দু'দেশের মানুষের মাঝে যোগাযোগ (কানেক্টিভিটি) ও বাণিজ্যের প্রসারে আন্তঃদেশীয় রেল ও সড়ক সংযোগ স্থাপনে চলমান কাজ দ্রুত সমাপ্তির জন্য আমরা চেষ্টা করছি।” আন্তর্জাতিক মুদ্রার উপর নির্ভরতা কমাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের যে উদ্যোগ, সেটাকে ‘অত্যন্ত প্রশংসনীয়’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। ওই বৈঠকে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, উপকূলীয় জাহাজ চলাচল, সীমান্ত হাটের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও হাই কমিশনার। পাশাপাশি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে, সে বিষয়েও কাজ শুরু করার ওপর গুরুত্ব দেন বৈঠকে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রথম সফরে হাছান মাহমুদের দিল্লি যাওয়াকে উভয় দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব ও অগ্রাধিকারের প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করা হয়। সেখানে বলা হয়, “বাংলাদেশের নতুন সরকার শপথ গ্রহণের পর এটি হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। উভয় দেশ নিজেদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারত্বকে কতটা বেশি গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেয়, এই সফর তার প্রতিফলন করছে।” অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট উপ-আঞ্চলিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়গুলোতেও তাদের আলোচনা হওয়ার কথা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |