চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সমস্যা দেখার কেউ নেই
ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম
|
নারী শিক্ষার অগ্রগতি ও নারীদের সু-শিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরকার নারীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি, উপবৃত্তি, বিনা মূল্যে বই বিতরণসহ বিবিধ সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে। এ সুযোগ সুবিধার মধ্যে উপবৃত্তি ও শিক্ষাবৃত্তি পেলেও নগরীর চট্টগ্রাম সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক স্বল্পতার কারণে চরমভাবে পাঠদান কার্যক্রমে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। চট্টগ্রাম সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষক স্বল্পতা থাকায় বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা পাঠদানের জন্য শিক্ষক না পেয়ে চরম উৎকন্ঠা প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিপ্টের এই বিদ্যালয়ে সরকারী জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষক থাকার কথা ২৮জন। বর্তমানে দুই শিপ্টে শিক্ষক/শিক্ষিকা আছে মাত্র ২৪ জন।এক শিপ্টে ১৪জন শিক্ষক দিয়ে ৬শ উপরে ছাত্রীকে পাঠদান দেয়া হচ্ছে।অথচ সরকারি জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষক থাকার এক শিপ্টের জন্য ১৮ জন,তদস্থলে আছে ১৪জন। বিদ্যালয়টি ১৯৭৪ সনে প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রধান শিক্ষকসহ ১৪ জন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৪ সনে জাতীয়করণ করা হলেও সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী পদসৃষ্টি করা হয়নি আগের মতো এক শিপ্টে ১৪ জন হিসাবে দুইশিপ্টে ২৮ জনকরা হয়।বর্তমানে সেই ২৮জন শিক্ষক/শিক্ষিকা নেই। তখন থেকেই শিক্ষক স্বল্পতা লেগেই আছে। নিয়ম অনুযায়ী দুই শিপ্টের জন্য দুইজন সহকারি প্রধান শিক্ষক থাকার নিয়ম হলেও দুইশিপ্ট মিলে সহকারী প্রধান শিক্ষক আছেন একজন। পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক, রসায়ন বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক, ধর্মীয় শিক্ষক (হিন্দু) কম্পিউটার শিক্ষক, তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষক, চারুকলা শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। অবশ্য সৃষ্ট পদের মধ্যে কম্পিউটার শিক্ষক, তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষক, চারুকলা শিক্ষকগুলোর পদ জন্ম থেকে শুন্য রয়েছে। বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষক স্বল্পতার কারনে নবম দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান ব্যবহারিক ক্লাশ হচ্ছেনা বছরের পর বছর।যার ফলে এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে যাওয়া ছাত্রীরা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাচ্ছেনা।এছাড়া কর্মরত ১৪ জন শিক্ষকের গড়ে এক’শ ছাত্রীকে প্রতিদিন পাঠদান দিতে হিমসিম খেতে হয় বলে কর্মরত শিক্ষকরা জানান। প্রধান শিক্ষক জনাব জাহেদুল ইসলাম জানান,সিটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের পুরানো ভবনও ঝুকিঁর্পূণ হয়ে পড়েছে। যে কোন সময়ে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। একটু বৃষ্টি হলে একাডেমিক ভবন আর প্রশাসনিক ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারে না। এ ভবনগুলো মেরামত ও পূনঃনির্মাণ করার জন্য শিক্ষা প্রকৌশলী বরাবর একাধিকবার লিখিত আবেদন করা হলেও তা কোন কাজ হচ্ছে না। তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী তিনজন থাকার নিয়ম থাকলেও এখনও কোন তৃতীয় শ্রেণীর পদ সৃজন করা হয়নি।যার কারনে স্কুল প্রদত্ত বেতনে চলে দুইজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। ৪র্থ শ্রেণীর ৫ জন কর্মচারীর মধ্যে ২ জন কর্মচারী কর্মরত আছে। অফিস সহকারি পদটি দীর্ঘ একযুগ ধরে শুন্য রয়েছে। নৈশপ্রহরী না থাকায় ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী একজন মহিলাকে দিবা-নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করার দায়িত্ব দেওয়া হলেও মহিলার পক্ষে নৈশ্য প্রহরীর দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছেনা,ফলে রাতে অরক্ষিত থাকে এই বিদ্যালয়টি। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জনাব জাহেদুল ইসলাম খান সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব তজল্লী আজাদ,মনিং শিপ্টের ইনচার্স বাবু অরুণ কৃষ্ণ পাল জানান, এইসব বিষয়ে আমরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপ-পরিচালক মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবরের অনেক বার আবেদন নিবেদন করেও কোন কাজ হচ্ছেনা।আমরা এবার চট্টগ্রামে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী পেয়েছি শীঘ্রই আমরা মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে যাবো এবং ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়ের সমস্যার বিষয় তুলে ধরবো।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |