বিটিভির জিএম মাহফুজার দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
বিটিভি ঢাকা কেন্দ্রের চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ২১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ইতোমধ্যে মাহফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক নাঈমুল ইসলামকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি দুদক কর্মকর্তা নাঈমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালকের কাছে মাহফুজা আক্তারের দুর্নীতির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মাহফুজা আক্তারের বিষয়ে বিটিভির কাছে বেশ কিছু তথ্য ও রেকর্ডপত্র চেয়েছে দুদক। চিঠিতি মাহফুজা আক্তারের ব্যক্তিগত নথির ছায়ালিপি, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের তথ্য এবং বাজেট ব্যয়ের পর দাখিলকৃত প্রতিবেদনের কপি, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা (সংশোধিতসহ), চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম বাংলো মেরামতের খরচের তথ্য, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রে কতগুলো সাপ্তাহিক ও ধারাবাহিক নাটক এবং অনুষ্ঠান নির্মাণ হয়েছিল সে সংক্রান্ত তথ্য এবং ২০১৪-২০১৯ পর্যন্ত মাহফুজা আক্তার কর্তৃক ঢাকা কেন্দ্রে প্রযোজনাকৃত ধারাবাহিক ও সাপ্তাহিক নাটকের তালিকা চেয়েছে দুদক। উল্লেখিত তথ্য ও রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি আগামী ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করার জন্য দুদকের চিঠিতে বলা হয়। সম্প্রতি বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজিত রায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়টি প্রথমে নিজেরা তদন্ত না করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। দুদক পরিচালক (দৈনিক ও সাম্প্রতিক) উত্তম কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চিঠি গত ৭ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়। এরপর গত ২৯ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শেখ মুসলিমা মুন (টেলিভিশন-১ শাখা) স্বাক্ষরিত অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য বিটিভি মহাপরিচালক বরাবর পাঠান। তথ্য রয়েছে, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম থাকা অবস্থায় অনুষ্ঠান প্রযোজনা করার নিয়ম না থাকলেও মাহফুজা নিজেকে প্রযোজক দেখিয়ে ৬৩৯টি অনুষ্ঠান করেছেন। এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে নাটক নির্মাণের নামে টাকা তোলা হলেও তা নির্মাণ না করে ভুয়া বিল-ভাউচারের প্রায় কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিটিভির রেকর্ড ভঙ্গ করে শিল্পী সম্মানী খাত থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা লুটপাট করেছেন মাহফুজা আক্তার। ওই সময় বিটিভির ঢাকা কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের সম্মানী ৬ মাসেরও বেশি বন্ধ ছিল। এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (চলতি দায়িত্ব) মাহফুজা আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, দুদকের বিষয়টি আমি এখনো ক্লিয়ার না। দুদকের কোনো কাগজ পাইনি। তিনি বলেন, আমি একজন নারী হয়ে এই পদে আছি, কীভাবে আমাকে সরিয়ে আরেকজন আসবেন সেজন্য এমন মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে। ২১ কোটি টাকা দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে জানি না, আমার কাছে কেউ এ বিষয় জানতেও চায়নি।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |