'পুরুষের প্রতি আইনি বৈষম্য: আমাদের করণীয়' শীর্ষক এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন'র উদ্যোগে আলোচনা
লিটন গাজী
|
![]() 'পুরুষের প্রতি আইনি বৈষম্য: আমাদের করণীয়' শীর্ষক এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন'র উদ্যোগে আলোচনা ঢাকা জেলা সহ-সভাপতি ইফতেখার হোসেন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের এর সভাপতি ডঃ আব্দুর রাজ্জাক খান। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের ঢাকা জেলার সভাপতি হাদিউজ্জামান পলক। আলোচনায় প্রধান অতিথি ড. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, "শুধুমাত্র নারীর অভিযোগে প্রমাণ ছাড়া অন্যায় ভাবে পুরুষকে গ্রেপ্তার করা বন্ধ করতে হবে। মিথ্যা হয়রানি নির্যাতন এর মামলা বন্ধের সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।" আলোচনায় বিশেষ অতিথি মন পরিবার এর ফাউন্ডার ইমরান শরীফ বলেন, "সন্তানের উপর পিতা ও মাতার আইনগত অধিকার সমান হওয়া উচিত, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আদালত সন্তানের উপর মায়ের পূর্ণ অধিকার দেয়া হয়, বাবার উপরে চাপিয়ে দেয়া হয় শুধু ভরণ পোষণের দায়িত্ব।" বিশেষ অতিথি ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান বর্তমান প্রেক্ষাপট আলোচনা সাপেক্ষে "আইন পরিবর্তনের দাবি তোলেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে পুরুষের ন্যূনতম অধিকার আদায়ের সোচ্চার হবার তাগিদ দেন। মিথ্যা যৌতুকের মামলা হওয়ার পরেও আদালতে একজন পুরুষকে আপোষ করতে বাধ্য করা হয় যা একেবারেই অনৈতিক।" আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ লোকমান, মোহাম্মদ আশিকুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মাইনুল ইসলাম, চন্দন কুমার দাস, রাহাত হোসেন রাহাত, আমিনুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, হাফেজ মোহাম্মদ সোলয়মান প্রমুখ। পুরুষ দিবসে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম তার বক্তব্যে বলেন, "পুরুষের প্রতি ঘটে যাওয়া আইনি ও সামাজিক বৈষম্য তুলে ধরেন এবং পুরুষের অধিকার রক্ষায় জাতীয়ভাবে "জাতীয় পুরুষ দিবস" পালনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো দাবি জানান।" সভাপতি মোঃ হাদিউজ্জামান পলক বলেন, "আমরা নারী পুরুষের সমান অধিকার চাই। লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন চাই। নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি পুরুষ মন্ত্রণালয় চাই। প্রতি বছর রাষ্ট্রীয় ভাবে বিশ্ব পুরুষ দিবসে সফল পুরুষ ও ব্যক্তিত্বকে বিশেষ অবদানের জন্য স্বীকৃতি দিতে হবে। মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় তদন্ত না করেই গ্রেফতার নিঃসন্দেহে পুরুষের উপর আইনি নির্যাতন। এ ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে আইনের অপব্যবহার রোধ করতে হবে।" অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, গবেষক, আইনজীবী, লেখক, মানবাধিকার কর্মী, ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। সংগঠনের পক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি করেন। ১৩ দফা দাবি- ১. অপহরণ : বিবাহের উদ্দেশ্যে বা প্রেম গঠিত কারণে ছেলে-মেয়ে উভয়ে পালিয়ে গেলে শুধুমাত্র ছেলে ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হয়। এই কৃতকর্মের জন্য শুধুমাত্র ছেলের শাস্তি বিধান হওয়াটা অযৌক্তিক বিধায় তা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। [বিবাহের উদ্দেশ্যে বা প্রেমঘঠিত কারণে কোনো ছেলে বা মেয়ে স্বেচ্ছায় পালিয়ে গেলে উক্ত ঘটনাকে অপহরণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত না করা।] ২. পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ এ সংযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে শিশু ও নারীর পাশাপাশি পুরুষকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ৩. বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ককে ‘ধর্ষণ’ বলা যাবে না এবং এই ক্ষেত্রে যদি শাস্তি হয় তাহলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য শাস্তির বিধান থাকতে হবে। ৪. নারী ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণ আলাদা সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করে পুরুষ ধর্ষণের সংজ্ঞা তৈরি করে লিঙ্গনিরপেক্ষ ধর্ষণ আইন তৈরী করতে হবে। ৫. পারিবারিক জীবন ব্যবস্থা, সভ্য সমাজ ব্যবস্থা, ব্যক্তিগত আইন এবং পুরুষদের মানবাধিকারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশীয় আইনে পশ্চিমা সংস্কৃতিতে সৃষ্ট তথাকথিত বৈবাহিক ধর্ষণের ধারণার অনুপ্রবেশ না ঘটানো। ৬. মিথ্যা ধর্ষণ মামলা প্রমাণিত হলে মামলাকারীর বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির বিধান থাকতে হবে। (ধর্ষকের সমমান শাস্তির বিধান করতে হবে)। ৭. যৌতুক সংক্রান্ত মামলায় সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর পূর্বে তদন্ত প্রতিবেদন বাধ্যতামূলক করা। ৮. পুরুষের লিঙ্গ কর্তন বা অন্য কোনও উপায়ে কোনও পুরুষকে পুরুষত্বহীন করার শাস্তি মৃত্যুদন্ড করতে হবে। ৯. বহুবিবাহ প্রতারণারোধে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ডিজিটালাইজ করা। ১০. পুরুষের মানবাধিকার রক্ষা ও পুরুষ নির্যাতন রোধে আইন প্রনয়ণ করতে হবে। ১১. কাবিন বানিজ্যরোধে সাধ্যের অতিরিক্ত কাবিন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, বিধান থাকতে হবে। ১২. ব্যভিচারের ৪৯৭ ধারা কে সংশোধন করে পরকীয়ায় আসক্ত নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমান শাস্তির বিধান থাকতে হবে। ১৩. পুরুষ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |