তেঁতুলিয়ায় বিষ জাতীয় কিটনাশক দিয়ে ধান নষ্ট করার অভিযোগ।
মুস্তাক আহমেদ, পঞ্চগড়
|
তেঁতুলিয়ায় এক গবীর অসহায় কৃষকের এক একর জমির ধান সলো পয়জন (ঘাস মারা/বনমারা, চা বাগানে ব্যবহৃত সলো কিটনাশক ও বিষ) ছিটিয়ে নষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের শিবচন্ডি গ্রামের গরীব কৃষক শরীফ উদ্দীন । পরের জমি উচ্চমূল্যে বর্গা নিয়ে এনজিও থেকে উচ্চহারে সুদ নিয়ে এক ১ একর জমিতে ধান রোপন করেছিলেন। ভেবেছিলেন এই ধান দিয়ে সারাবছর পরিবারের খাবারের জোগান হবে। কিন্তু সেই অন্নের উপর শকুন হানা দিয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুবৃত্তরা রাতের অন্ধকারে ফসল আসা ধান ক্ষেতের উপর বিষ জাতীয় কিটনাশক ছিটিয়ে দিয়েছে। এতে ধীরে ধীরে ধান গাছের গোড়ায় পচন ধরতে শুরু করে, আগমনী সোনালী ধান আর ফুটতে পারে না। যেন জন্ম নেয়ার আগেই শষ্যদানাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার দিন ১১ অক্টোরব ২০২৩ । প্রতিদিনের ন্যয় সেদিনও কৃষক শরীফ উদ্দীন ধান ক্ষেত দেখতে দিয়ে দেখে সমস্ত ধানক্ষেত ঝিমিয়ে গেছে এবং ধান ক্ষেতের ভিতর দিয়ে একাধিক মানুষের পায়ের ছাপ । অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় বিবাদীগণ রাতের অন্ধকারে বেআইনী দলবদ্ধতায় জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে ঘাস মারা/বন মারা, বিষ জাতীয় কিটনাশক প্রয়োগ করেছে। শরীফউদ্দীন সাথে সাথে স্থানীয় কৃষক ভাইদের সহযোগিতায় উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেন। সহকারী কৃষি অফিসার আক্রান্ত জমির ধান সচক্ষে দেখে ও পর্যবেক্ষন করে কিছু রিকোভারি কিটনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন। এভাবেই চলতে থাকে বেশ কিছু দিন, ধীরে ধীরে ধান গাছের গোড়ায় পচন ধরা শুরু করে। ধান গাছে ফলন আসা বন্ধ হয়ে যায়, যে ফলন এসেছিল তা পচন ধরে যায় । ধান গাছের সবুজ ক্ষেত শুকিয়ে যেতে থাকে । ধীরে ধীরে শরীফউদ্দীনের স্বপ্ন মিথ্যা হতে শুরু করে। চোখের সামনে ১ একর জমির ধান ধংস হতে থাকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পাশের ক্ষেতের ধান বিপরীতে শরীফউদ্দীনের ধান ক্ষেত স্পষ্টত নষ্ট হওয়ার প্রক্রিয়ায়। স্থানীয় একাধিক ধান চাষী বলেন চা বাগানে ব্যবহৃত সলো বিষ জাতীয় কিটনাশক দিয়ে ধান ক্ষেত নষ্ট করা হয়েছে। অভিযোগকারী শরিফউদ্দীন বলেন অভিযুক্তরা র্দীঘদিন যাবত আমাকে নানা রকম হুমকি ধামকি দিয়ে জমি বেদখলে নেয়ার পায়তারা করতো। আমাকে জমিতে হালচাষ করতে দিত না, আমি কোদাল দিয়ে মাটি কুপিয়ে কুপিয়ে নিদারুন কষ্টে চাষাবাদ করি। অভিযুক্তরা প্রায়ই আমাকে হুমকি দিয়ে বলতো কিভাবে ধান বাড়িতে নিয়ে যাও, দেখবো। আমি এখন অসহায় হয়ে গেলাম , আমি সারাবছর কি খাব, কিভাবে পরিবারের অন্ন জুটাবো। আমার প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। আমি নিঃশ্ব হয়ে গেলাম। ঋণ পরিশোধ করবো কিভাবে। সন্তানদের লেখাপড়ার কি হবে? আমি এর বিচার চাই। অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। সহকারী কৃষি অফিসার হুমায়ুন কবির বলেন , আমরা ল্যাবটেষ্ট ছাড়া বলতে পারিনা যে ধান ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে যেহেতু আমার দেয়া রিকোভারি কিটনাশক দিয়েও ধান ক্ষেত স্বাভাবিক হয়নি , অতএব ধানক্ষেতে বিষ প্রয়োগের মত ঘটনা ঘটতে পারে। তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন আমরা অভিযোগ পেয়েছি , তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |