হারুনের সঙ্গে বিয়ে ও সে রাতের ঘটনায় মুখ খুললেন এডিসি সানজিদা
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() হারুনের সঙ্গে বিয়ে ও সে রাতের ঘটনায় মুখ খুললেন এডিসি সানজিদা মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সানজিদা বলেন, আমার কয়েক মাস ধরে কার্ডিয়াক সমস্যা হচ্ছিল, এই সমস্যা আমার ২০১৯ সাল থেকে ছিলো, কিন্তু ডাক্তার দেখানোর সময় পাচ্ছিলাম না। সেদিন অবসর সময় থাকায় এডিসি হারুন স্যারকে ফোন করে ইবরাহিম কার্ডিয়াকে ডাক্তারের সিরিয়াল ব্যবস্থা করে দিতে বলি। পরে তিনি ওসিকে দিয়ে একজন চিকিৎসকের সিরিয়াল ব্যবস্থা করে দেন। সেই অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টার পর হাসপাতালে যাই। গিয়ে দেখি যে চিকিৎসকের ম্যানেজ করা হয়েছে তিনি কনফারেন্সে আছেন। এ বিষয় হারুন স্যারকে জানালে তিনি কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আসেন এবং একজন ডাক্তার ম্যানেজ করে দেন। তিনি বলেন, ডাক্তার দেখানোর পর আমকে বেশ কিছু টেস্ট করতে বলেন। ইকো, ইসিজি টেস্ট করে আমি ইটিটি রুমে যাই। সেখানে পরীক্ষা করাতে আমার ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে। হঠাৎ করে ইটিটি রুমের বাইরে হট্টগোল শুনতে পাই। এসময় আমার হাজব্যান্ডের কথা শুনতে পাই। পরে কয়েকজন মিলে এডিসি হারুন স্যারকে মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে আসে। সেখানে বেশ কয়েকজন ছেলে ছিল। আমি তাদের কাউকে চিনি না। ঘটনার সময় সানজিদা ইটিটি রুমে ছিলেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, যখন স্যারকে তারা মারছিলেন তখন আমি ইটিটি রুমে টেস্ট করার পোশাকে ছিলাম। স্বাভাবিক অস্থায় পোশাকটা খুব শালীন অবস্থায় ছিল না। এর মধ্যে আমার হাজব্যান্ড ওই ছেলেগুলোকে বলে ওদের ভিডিও কর। একটা ছেলে যখন ভিডিও করছিল তখন আমি বুঝতে পারি তাদের কোন অসৎ উদ্দেশ্য আছে। তাই আমি ওই ছেলের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় আমার হাজব্যান্ড আমার গায়ে বেশ কয়েকবার হাত তোলে। এরপর আমি যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমার হাতেও আমি সামান্য ব্যথা পাই। কারণ আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না। এডিসি সানজিদা বলেন, হারুন স্যারকে যখন মারছিল। স্যার তাদের হাত থেকে বাঁচতে ভিতরে অবস্থান করে। স্যারকে বার বার বলছিল বাইরে বের হতে। স্যার তখন বলে আমি বের হলে তো আপনারা আমাকে মেরে ফেলবেন। পরে স্যার থানায় কল দেওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর ফোর্স আসে। পরে তারা নিচে চলে যায়। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে কী ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে পুরো বিষয় বেরিয়ে আসবে।' ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার। অনেকে নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে হারুন স্যারের সঙ্গে আমার বিয়ের কল্পকাহিনী প্রচার করছে। যে কেউ ভালোভাবে খেয়াল করলেই বুঝবে- ওই ছবির নারী আমি নই। এর আগে অনেক ইস্যুতে অনেকেই বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। এবার আমি এর শিকার।’ সানজিদা আরও বলেন, ‘হারুন স্যারের সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। তিনি শুধু আমার কলিগ। তবে হারুন স্যারের সহযোগিতা নিয়েছিলাম। তিনি আমাকে ডাক্তারের সিরিয়ালের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।’ সানজিদা আরও বলেন, ‘ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) দেখে মনে হয়েছে, তারা আমাদের দু’জনকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে একটা ভিডিও করতে চাচ্ছে। পরবর্তীকালে তারা সেটি ইউজ (ব্যবহার) করবেন, একটি অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য হতে পারে। আমি চেষ্টা করেছি যেন ছবি তুলতে না পারে।’ পরিকল্পিতভাবে আপনার স্বামী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন কিনা-জানতে চাইলে সংবাদমাধ্যমকে সানজিদা বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না বলতে পারব না। তবে তিনি খুব মারমুখী ছিলেন।’ এদিকে হারুন অর রশিদের ওপর প্রথমে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। এ হামলার নেতৃত্বে ছিলেন রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, এ ঘটনার সূত্রপাত যে কারণে হয়েছে, যিনি সূত্রপাত করেছেন, তিনিও (রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক) একজন সরকারি কর্মকর্তা। উনি আমাদের পুলিশের ওপর হামলাটি করেছেন। তিনি তো ইচ্ছে করলে আমাদের (পুলিশ) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন, অবহিত করতে পারতেন। অথবা তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন। সেটি না করে হাসপাতালের ভেতরে অসংখ্য মানুষের সামনে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ধাওয়া করা, তার চশমা ভেঙে ফেলা, তার ওপর আঘাত করা—এটা সঠিক করেছেন কি না, আমি জানি না। তবে এটা তদন্ত হওয়া উচিত। ডিবি প্রধান মনে করেন, ঘটনার নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করা দরকার। ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতালে। সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল তার তদন্ত হওয়া দরকার। এরইমধ্যে বরখাস্ত এডিসি হারুনকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডিএমপি তে থাকছেন না এডিসি সানজিদাও।
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |