ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
সদস্য হোন |  আমাদের জানুন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
১৪৭ বছর পেরিয়ে জিনস তৈরির
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Sunday, 7 November, 2021, 9:48 AM

১৪৭ বছর পেরিয়ে জিনস তৈরির

১৪৭ বছর পেরিয়ে জিনস তৈরির

১৮৭৩ সাল। নেভাদায় তখন চলছে গোল্ড রাশ। সবাই চলেছে সেদিন ভাগ্যান্বেষণে। ১৮৭৩ থেকে ১৯৯৮। ব্যবধান সোয়া শতকের। ১২৫ বছর। এর সঙ্গে আরও ২২ বছর যোগ করলে সেটা ১৪৭-এ দাঁড়ায়। অথচ সেই ১৮৭৩ সালে কেজো পোশাক হিসেবে যার উদ্ভব সেটার আবেদন আজও অবিশ্বে অবিকল।

কথা হচ্ছে ডেনিমের। আঠারো শতকের সেই গোল্ড রাশের জমানায় সবাই যখন পশ্চিমমুখী তখন জার্মানির বাভারিয়া অঞ্চল থেকে লেভি স্ট্রস নামের এক যুবক সেই সোনার খনির সন্ধানে হাজির হয়ে গেলেন সেই বুনো পশ্চিমে। সেখানেই তিনি কাজের পোশাক হিসেবে পাঁচ পকেটের রিভেট এক প্যান্ট তৈরি করিয়ে ইতিহাস হয়ে গেলেন। কিন্তু তখন কি ভাবা গিয়েছিল কি হতে যাচ্ছে তার এই কোজো পোশাকের।

এবার ১২৫ বছর এগিয়ে। ১৯৯৮ সালে প্রথম আলোর জন্ম হলো ৪ নভেম্বর। প্রথম নকশা বেরোল জিনসকে প্রতিপাদ্য করে। এবার যোগ করা যাক আরও ২২ বছর। অর্থাৎ প্রথম আলোর বর্ষপূতি আজ। পা তেইশে।

অথচ এই যে ১৪৭ বছর, ডেনিম কাপড়, তা দিয়ে তৈরি জিনস এবং অন্যান্য পোশাক ও অনুষঙ্গ আজও সমান আদৃত বিশ্ব জুড়ে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডেনিমের বাজার হলো ২১.৮ বিলিয়ন ডলার। যেখানে কেবল জিনসই বিক্রি হয় ৫০০ কোটি ডলার।

যাই হোক ১৯৯৮ সালের কথা মনে আছে? তখন তো ব্যাগির জমানা। ব্যাগি জিনস ছিল জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। ওই বছর ফ্যাশনপ্রিয়দের অবশ্য-তালিকায় ছিল টমি হিলফিগারের জিনস। যেটা সাধারণ ঐতিহ্যবাহী ইন্ডিগো জিনসের চেয়ে একটু গাঢ় রঙের। তবে বছর না ঘুরতেই আবার মিডিয়াম ওয়াশের ক্ল্যাসিক জিনস ফিরে আসে চলতি ধারায়। বিপুলভাবে হয়ে ওঠে জনাদৃত। এর জনপ্রিয়তায় অনুঘটক হন ব্রিটনি স্পিয়ার্স। তার জিন্সে একেবারে নিচের দিকটা ছিল একটু ফ্লেয়ার দেওয়া।

চলতি ধারা তো ফিরে ফিরে আসে। তাই ষাটের দশকের স্কিনি জিনসের চলতি ধারা আবার ফিরে বেশ কয়েক বছর দাপিয়ে রাজত্ব করেছে। তবে আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে একটা প্রভাব অবশ্যই অতিমারী। মানুষের পোশাক রীতিতে গত দুই বছরে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এটা আর যাই হোক অস্বীকার করা যাবে না।

তা ছাড়া জিনসের সেই স্লিক সিলুয়েট রূপান্তরিত হয়েছে ঢিলেঢালা সিলুয়েটে। বলা যায় আবার ফিরছে ব্যাগি। হালের চলতি ধারায় আরও রয়েছে ভিনটেজ ও রেট্রো-প্রাণিত স্ট্রেট লেগড জিনস, ছেঁড়াফাটা জিনস, ফ্লেয়ার জিনস, বুট কাট জিনস। এসবই ফিরে আসা স্টাইল। তবে প্রান্তে বা হেম লাইনে র-এজ কিংবা কোন ডিজাইনও নজরে আসবে। এ ছাড়া দেখা যাবে সেই হাই ওয়েস্ট ও ফেডেড স্টাইল।

জিনসের সঙ্গে টি-শার্ট। এ যেন ক্ল্যাসিক স্টাইলে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া ডেনিমের তৈরি নানা ধরনের পোশাক যেমন আছে তেমনি অন্য পোশাকও দোসর হচ্ছে জিনসের।

জিনস ছাড়া ডেনিম দিয়ে শার্ট, স্কার্ট, টপ, জাম্পস্যুট, কুর্তা, জ্যাকেট, এমনকি পাঞ্জাবিও তৈরি হচ্ছে। ফলে বৈচিত্র্য আর বিকল্পের অভাব নেই। অতএব পরা যায় নানাভাবে- অল ওভার ডেনিম যেমন তেমনি মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করেও।

ডেনিম প্রথম পত্রিকার প্রচ্ছদ হয়েছে ১৯৪৩ সালে। ফরাসি পত্রিকা মাদামোয়াজেলে। মেরিলিন মনরো পরেছেন ১৯৫২ সালে। মজার ব্যাপার হলো ডেনিম দিয়ে সুইম স্যুট হয়েছে ১৯৫৮ সালে। ১৯৬০ ব্রিজিট বার্দো যে স্কিনি জিনস পরেছেন তা কদিন আগেও ছিল চলতি ধারা। যা হোক, জিনস পরেননি কে? অড্রে হেপবার্ন, এলভিস প্রিসলি, ম্যাডোনা, লেডি ডায়ানা থেকে ব্র্যাট পিট তালিকা অশেষ।

কোন কাপড়কে বেসিক ফ্যাব্রিক হিসেবে ব্যবহার করে কোন ডাকসাইটে ডিজাইনার যখন কোন পোশাক তৈরি করেন তখনই বলতে গেলে সেটা জাতে ওঠে। ডেনিমের ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য। ১৯৮০ সালে এই কাণ্ডটি ঘটান কেলভিন ক্লেইন। তাঁর ডিজাইন করা জিনস পরে জগৎ মাতান ১৫ বছরের ব্রুক শিল্ড। পরবর্তীতে যিনি হয়ে ওঠেন হলিউডের প্রিয়মুখ। সেই ব্লু জিনসের চাহিদা আজও রয়েছে। এর সঙ্গে নতুন করে জনপ্রিয় হচ্ছে নানা ওয়াশের জিনস।

কত ধরনের জিনস যে আছে তার ইয়ত্তা নেই। বলা হয়, পায়ের গড়ন আর ঘের ভেদে রয়েছে ৪৫ ধরনের জিনস। এর সঙ্গে নানা স্টাইল তো আছেই। আবার ওয়াশের দিকে তাকালেও মিলবে নানা বৈচিত্র্য।

বর্তমানে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে লিঙ্গ নিরপেক্ষ জিনস। তবে জিনসের পাশাপাশি লিঙ্গ বিহীন পোশাক সোয়েটশার্ট আর জ্যাকেটও ছেলেমেয়ে উভয়ের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে।

এভাবেই বিশ্বজুড়ে ডেনিম কাপড় দিয়ে তৈরি জিনস এবং অন্যান্য পণ্যও বিশেষভাবে সমাদৃত হচ্ছে। এই বাজার দিনকে দিন বাড়ছে বৈ কমছে না। বলতে গেলে ডেনিম এমন একটা ধরনের কাপড় যা দিয়ে পা থেকে মাথা-পর্যন্ত ব্যবহৃত পোশাক এবং অনুষঙ্গ সবই তৈরি করা সম্ভব এবং হচ্ছেও।

তাই বলতেই হয় উদ্ভাবনের ১৪৭ বছর পেরিয়েও জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকে গেছে ডেনিম। আর এই লেখার সঙ্গে প্রথম আলোর বর্ষপূর্তির একটা সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টাও হয়েছে। সংগত কারণেই মনে হয়েছে আমাদের বিশ্বব্যাপী অনলাইন আর ছাপা পত্রিকার যত পাঠক তার কত শতাংশের প্রিয় পোশাক জিনস কিংবা ডেনিমের সামগ্রী তা নিয়ে একটা জরিপ হতেই পারে।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status