ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
সদস্য হোন |  আমাদের জানুন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
৭০ শিশুর সাজা, আদালতে হাজিরা দিতে হবে না, করতে হবে ভালো কাজ
নতুন সময় প্রতিনিধি
প্রকাশ: Wednesday, 13 October, 2021, 3:48 PM
সর্বশেষ আপডেট: Wednesday, 13 October, 2021, 4:31 PM

৭০ শিশুর সাজা, আদালতে হাজিরা দিতে হবে না, করতে হবে ভালো কাজ

৭০ শিশুর সাজা, আদালতে হাজিরা দিতে হবে না, করতে হবে ভালো কাজ

সুনামগঞ্জে শিশু-কিশোররা অভিযুক্ত এমন অর্ধশতাধিক মামলায় ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছে আদালত।

এই রায়ে ৭০টি শিশুকে তাদের অপরাধের জন্য একবছরের সাজা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সাজার জন্য তাদের কারাগারে যেতে হবে না, বরং নিজের বাড়িতে থেকেই বাবা-মায়ের কথা শুনতে হবে এবং ভালো কাজ করতে হবে।

সুনামগঞ্জের শিশু আদালতের বিচারক মোঃ জাকির হোসেন এই রায় দিয়েছেন।

অপরাধে অভিযুক্ত হলেও যাদের বয়স ১৮ বছরের নীচে, অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের শিশু আদালতে বিচার করা হয়ে থাকে। আদালত তাদের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে তাদের বাবা-মায়ের কাছেই হস্তান্তর করেছে।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি হাসান মাহবুব বলছেন, ''৫০টি মামলায় ছয়টি শর্তে ৭০টি শিশুকে আদালত প্রবেশন দিয়েছে। এই একবছর তাদের এসব শর্ত মেনে চলতে হবে। একবছর পর তাদের আবার আদালতে এসে উপস্থিত হতে হবে।''

''তখন যদি দেখা যায় যে, তারা সব শর্ত মেনে চলেছে, তাহলে তারা মুক্তি পেয়ে যাবে। কিন্তু সেটা যদি না হয়, তাহলে তাদের আবার সাজা পেতে হতে পারে।''
চুরি, মারামারি, শ্লীলতাহানি, পুলিশের কাজে বাধা দেয়া, ফেসবুকে অশ্লীল ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ-ইত্যাদি অভিযোগে এই শিশুদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বয়স ১৪ বছর থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

সরকারি কৌসুলি মাহবুব হাসান জানিয়েছেন, প্রত্যেক শিশুকে ছয়টি করে শর্ত বেধে দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককেই এসব শর্ত মানতে হবে।

যেসব শর্তে তাদের প্রবেশনে মুক্তি দেয়া হয়েছে:

১. প্রতিদিন তাদের দুটি করে ভালো কাজ করতে হবে। তাদের যে ডায়রি দেয়া হয়েছে, সেখানে এসব ভালো কাজের বর্ণনা লিখে রাখতে হবে।

২. বাবা-মা এবং গুরুজনদের কথা মেনে চলতে হবে। বাবা-মায়ের যত্ন ও সেবা করতে হবে।

৩. ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান নিয়মিত পালন করতে হবে। নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে হবে।

৪. অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।

৫. মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে।

৬. ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সাথে জড়ানো যাবে না।

এই একবছর সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা তাদের কর্মকাণ্ড তদারকি করবেন। প্রতি তিনমাস পরপর প্রবেশন কর্মকর্তা এই বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেবেন।

''কারাগারে না গিয়ে ভালো কাজের মাধ্যমে তারা যাতে সংশোধন হতে পারেন, সুনাগরিক, ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারে, সেই পরিবেশ তৈরির জন্য এই রায়ের মাধ্যমে আদালত তাদের সুযোগ দিয়েছেন,'' বলছেন হাসান মাহবুব।

এর আগেও এই আদালত এ ধরনের ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন।

এই বছরের ২০শে জানুয়ারি ৩৫টি মামলায় ৪৯ টি শিশুকে মা-বাবার জিম্মায় মুক্তি দেয়া হয়েছিল। সেই সময় আদালতের পক্ষ থেকে বিশ্বের মনীষীদের জীবনী গ্রন্থও উপহার দেয়া হয়। সেই শিশুদের ১০টি শর্ত বেধে দেয়া হয়েছিল।

গত বছরের অক্টোবরে ১০টি মামলায় ১৪টি শিশুকে এ ধরনের সাজা দিয়েছিলেন এই আদালত। সেসব শিশুর বিরুদ্ধেও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে টাকা নেওয়া, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একজনের ছবির সঙ্গে অন্যের ছবি যুক্ত করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে অশ্লীল ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, শ্লীলতাহানি, মাদক রাখা, জুয়াখেলা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ ছিল।

এছাড়া এই বছরের ২২শে ফেব্রুয়ারি জাকির হোসেনের এই আদালতে ৫৪টি পারিবারিক মামলায় আপোষ নিষ্পত্তি হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর হাতে ফুল দিয়ে মিলমিশ করে দেয়া হয়েছিল।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status