ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
সদস্য হোন |  আমাদের জানুন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
গরমকালের বউ, মাত্র ২০ দিনের জন্য
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Monday, 23 November, 2020, 6:25 PM
সর্বশেষ আপডেট: Sunday, 1 January, 2023, 1:25 PM

গরমকালের বউ, মাত্র ২০ দিনের জন্য

গরমকালের বউ, মাত্র ২০ দিনের জন্য

মুসলিম পুরুষদের শর্ত সাপেক্ষে চার স্ত্রী গ্রহণের বিধান রয়েছে ইসলাম ধর্মে। তাই বলে কেবল গ্রীষ্মকালের জন্য বিয়ে করার কথা কখনো শুনেছেন। শুনুন আর নাই শুনুন, এই অদ্ভুদ বিয়ের চল রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ মিশরে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন।   

তেমনটাই হয়েছে কায়রোয়েতে। কায়রোর আশপাশের এলাকায় মূলত দরিদ্র লোকেদের বাস। যাদের চার ভাগের এক ভাগ মানুষকে দিনে দুই ডলারেরও (প্রায় ১৫০ টাকা) কম খরচে চলতে হয়। সেক্স ট্যুরিজম এই চরম দরিদ্রদের জীবনে নতুন আশা সৃষ্টি করছে। পর্যটকদের কেউ কেউ তো মেয়ের কুমারীত্ব, বয়স, চেহারা এবং বিয়ের স্থায়িত্ব বিবেচনা করে এক লাখ ইউরো (প্রায় ৯৫ লাখ টাকা) পর্যন্ত খরচ করতে রাজী হয়।

অর্থের লোভ দেখিয়ে মিশরের শত শত কিশোরীকে সাময়িক বিয়ে করে থাকেন ধনী দেশগুলো থেকে আগত পর্যটকরা। দেশটিতে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিষিদ্ধ হওয়ায় নিজেদের যৌন চাহিদা মেটাতে এমন সাময়িক বিয়ে করছেন দেশটিতে বেড়াতে আসা বিদেশি পর্যটকরা। এসব মেয়েরা দেশটিতে 'গ্রীষ্মকালীন বউ' হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।

এমনই বেশ কয়েকটি ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ পায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। তারমধ্যে একটি হলো ২০০৮ সালের গ্রীষ্মকালের একদিন। মিশরীয় কন্যা হুরাইরার বয়স তখন কেবল ১৫ বছর। দরজা খুলেই বাইরে এক পুরুষকে তার বাবা ও সৎ মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখল সে।

তার সামনেই হলো সব কথাবার্ত। মাত্র ১,৭৫০ ইউরো (প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা) ‘মোহরানা’র বিনিময়ে সৌদি আরব থেকে আসা সেই ব্যক্তিকে তার বিয়ে করতে হবে। ওই বিয়ের বয়স ছিল মাত্র ২০ দিন।

এই বিয়ের মাধ্যমে ক্রমাগত ধর্ষণের শিকার হতে হয়ে হুরাইরাকে। এরপর গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ। হুরাইরাকে আবার বাবা-মায়ের কাছে ফেরত দিয়ে নিজ দেশে ফেরত চলে যান ওই সৌদি নাগরিক। আর কখনও সে ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়নি হুরাইরার।

ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিশরে যৌনকর্মীদের আরেক নাম ‘গ্রীষ্মকালীন স্ত্রী’। তাদেরই একজন হুরাইরা। প্রতি বছরই উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ থেকে এমন ‘স্ত্রী’বেছে নিতে মিশরে আসেন পর্যটকেরা। এর বিনিময়ে মেয়ের পরিবারকে যে অর্থ দেয়া হয় তা তাদের জন্য অনেক কিছু।

হুরাইরা বলেন, সবকিছু খুব লোভনীয় লাগছিল। আমার পরিবার আমাকে নতুন কাপড় আর উপহারের লোভ দেখায়। আমি তখন খুব ছোট ছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি রাজী হয়ে যাই। হুরাইরার পরিবার তার বিয়ের যৌতুকের টাকায় একটি ফ্রিজ আর ওয়াশিং মেশিন কিনেছিলো।

হুরাইরার বয়স এখন ২৮। এর মধ্যে তার আরো আটবার বিয়ে হয়েছে। প্রতিবারই অল্প কিছু দিনের জন্য। নিজের অতীত নিয়ে তিনি লজ্জিত এবং নিজের আসল নামও প্রকাশ করতে চান না। বাইরে বের হলে নিজেকে সবসময় আড়াল করে রাখেন কালো নেকাবে।

তিনি বলেন, ‘আমি তখন খুব সহজ সরল ছিলাম, ভালোবাসায় বিশ্বাস করতাম। বিয়ের প্রথম রাত খুব ভয়াবহ ছিল। এরপর থেকে আমি মানসিক সমস্যায় ভুগি।’তবে এরপরও এই বিয়ের সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারেনি। কেননা দারিদ্রতার কারণে বার বার জোর করে বিয়ে দিয়েছেন তার বাবা।  

মিশরে এমন হুরাইরা একজন নয়, বহু। আর সঠিক আইন না থাকায় অপরাধীদের সাজা দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। হয়তো কোনো দালালকে ধরা হলো। তাকে শাস্তি দেয়া হলো ১৮ বছর। তবে কদাচিৎ দু একজনকে শাস্তি দিয়ে কি আর এসব অপরাধ বন্ধ করা যায়।

তাই মিশরে বিয়ের নামে অবাধে চলছে পতিতাবৃত্তি। আর দেশটিতে এ ধরনের বিয়ে সহজলভ্য হওয়ায় সৌদি আরব, কুয়েত, ওমানের মতো মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসছে পুরুষেরা। আর লোভে পড়ে তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছে হুমায়রার মতো সরল আর অল্পবয়সী মেয়েরা।

হুরাইরা এখন বাবা ও সৎ মায়ের সঙ্গেই আছেন। সত্যিকারের বিয়ের জন্য মনে মনে একজন সত্যিকার প্রেমিক পুরুষের সন্ধান করছেন হুরাইরা৷ তবে হুরাইরার সে আশা পূরণ হওয়ার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। কেননা মিশরে 'গ্রীষ্মকালীন স্ত্রী'দের খুবই খারাপ চোখে দেখা হয়।

মিশরের রক্ষণশীল সমাজের কোনো পুরুষই এমন মেয়েকে বিয়ের যোগ্য মনে করে না। তাই ফের হয়তো কোনো বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে আরেক বার গ্রীষ্মকালীন বিয়েতে রাজি হতে হবে হুমায়রাকে।

সম্পাদনায়: তাহের রাব্বী

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status